You are currently viewing মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জীবনী ও রাজনীতি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জীবনী ও রাজনীতি

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একজন প্রভাবশালী বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি বুধবার, ৩০শে মার্চ, ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর সপ্তম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এর আগে তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর। বিএনপির ৫ম জাতীয় সম্মেলন পরবর্তী কেন্দ্রীয় কমিটিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এর দায়িত্ব পান ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বরে। আজকে আমরা বাংলাদেশের এই সফল রাজনীতিবিদ এর ব্যক্তিগত ও রাজনিতির বিষয়ে বিস্তারিত জানব।

এক নজরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মূলনামঃ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ডাকনামঃ আলমগীর

জন্মঃ ২৬ জানুয়ারি ১৯৪৮

জন্মস্থানঃ ঠাকুরগাঁও, বাংলাদেশ

বর্তমান বসবাসঃ ঢাকা, বাংলাদেশ

পেশাঃ শিক্ষক, রাজনীতিবিদ

ভাষাঃ বাংলা

র্ধ্মঃ ইসলাম

জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী

বাবাঃ  মির্জা রুহুল আমিন

মাঃ মির্জা ফাতেমা আমিন

চাচাঃ মির্জা গোলাম হাফিজ

চাচাঃ  এস আর মির্জা

বৈবাহিক অবস্থাঃ বিবাহিত

স্ত্রীঃ রাহাত আরা বেগম

সন্তানঃ ২ টি

বড় মেয়েঃ মির্জা শামারুহ

মেয়ের পেশাঃ শিক্ষক

ছোট মেয়েঃ মির্জা সাফারুহ

কর্মজীবন শুরুঃ ১৯৭২

রাজনৈতিক দলঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল

উচ্চ মাধ্যমিকঃ ঢাকা কলেজ

স্নাতক ও স্নাতকোত্তরঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রথম সংসদ সদস্যঃ ২০০১

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর জন্ম ও পরিবার

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজনৈতিক পরিবারে। দেশের প্রথম সারির রাজনীতিবিদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৮ সালের ১ আগস্ট ঠাকুরগাঁও জেলায়। তার শ্রদ্ধেয় পিতা মির্জা রুহুল আমিন ছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের একজন প্রবীণ ও সক্রিয় রাজনীতিবিদ এবং সংসদ সদস্য। তার মাতার নাম মাতা মির্জা ফাতেমা আমিন। মির্জা আলমগীরের চাচা মির্জা গোলাম হাফিজ ছিলেন সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও সাবেক মন্ত্রী। তার আরেক চাচা এস.আর. মির্জা উইং কমান্ডার ছিলেন।

আরো জানুনঃ ওবায়দুল কাদেরের জীবনী

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর শিক্ষাজীবন ও ছাত্ররাজনীতি

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একজন মেধাবী ও সাহসী ছাত্র ছিলেন। মির্জা ফখরুল যেখান থেকে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।তিনি ছাত্র অবস্থায় ভিবিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (ইপিএসইউ) সদস্য ছিলেন, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হল ইউনিটের সেক্রেটারি জেনারেল এবং পরে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সময়ে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর কর্মজীবন

কর্মজীবনের শুরুতে মির্জা আলমগীর বাংলাদেশ এর প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ ঢাকা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অর্থনীতির শিক্ষক ছিলেন ১৯৭২ সালে। পরবর্তিতে তিনি অর্থনীতির শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনে চাকরী করেন এবং সেখানে একজন অডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান এর শাসন আমলে উপ-প্রধানমন্ত্রী এস.এ. বারির ব্যাক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক জীবন

বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য রাজনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম হলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি তার রাজনীতির সকল ক্ষেত্রে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। তিনি রাজনীতিক পরিবারে জন্ম হওয়ার কারণে তার রাজনীতির প্রতি একটা আলাদা ঝোক ছিল তাই তিনি ১৯৮৬ সালে শিক্ষকতা পেশা থেকে অব্যাহতি নিয়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। শুরুতে তিনি তৃণমূল পর্যায় থেকে তার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেন। রাজনীতির শুরুতে মির্জা আলমগীর ঠাকুরগাঁও পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে চমক দেখান এলাকাবাসীকে ১৯৮৮ সালে। 

তার বাবা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন তাই তিনি এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিতে যোগ দিয়ে স্বৈরাচার হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়। তিন বিএনপির ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হয় 1992 সালে। মির্জা আলমগীর বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হয় আওয়ামী লীগ প্রার্থী খাদেমুল ইসলামের কাছে। কিন্তু তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদন্দী ছিলেন আওয়ামী লীগের রমেশ চন্দ্র সেন।

সেই মেয়াদে, তিনি দুইটি মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। মন্ত্রনালয় দুইটি হল বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এং কৃষি মন্ত্রণালয়। এরপর তিনি ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ ও বগুড়া-৬ আসনে থেকে নির্বাচন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বগুড়া-৬ আসনে বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন কিন্তু তিনি তাতে শপথ নেন নি তাই আসনটিতে আবার উপ-নির্বাচন হয়।

মির্জা ফখরুলের ব্যক্তিগত জীবন

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্যক্তগত জীবনে খুবই সুখি একজন মানুষ। তিনি তার পরিবারকে ছায়ারমত আগলে রেখেছন পরম যত্নে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রাহাত আরা বেগমকে বিয়ে করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার স্ত্রী একজন বেসরকারী চাকরীজীবি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং রাহাত আরা বেগম দম্পতির মির্জা শামারুহ ও মির্জা সাফারুহ নামের দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। তাদের দুই মেয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন। তার বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন বর্তমানে। ছোট মেয়ে ঢাকার একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।

আরো জানুনঃ বেগম খালেদা জিয়ার জীবনী