আজকে আমরা কথা বলব বহু প্রতিভা ও গুণের অধিকার হিরো আলমকে নিয়ে। হিরো আলম তার নিজের প্রতিভা দিয়ে বাংলাদেশে নিজের একটা শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। তার জনপ্রিয়তা দেশ ছাড়িয়ে দেশের বাহিরে ভিবিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন। সাধারণ মানুষ বলে থাকেন আশরাফুল আলম পারেন না এমন কাজ খুজে পাওয়া যাবে না। তিনি যেখানে হাত রেখেছেন সেখানেই সফলতা পেয়েছেন। আপনারা অনেকেই এই গুণী মানুষটি সম্পর্কে জানতে চান। আপনাদের কথা চিন্তা করেই আজকে হিরো আলম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরব। তাই আলম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সর্ম্পন্ন লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।
Table of Contents
কে এই হিরো আলম?
হিরো আলম সর্ম্পকে জানেন না এমন লোক পাওয়া মুশকিল। হিরো আলমের মূলনাম আশরাফুল আলম সাঈদ। একজন সাধারণ ও নিম্ন মধ্য আয়ের একটি পরিবারে যার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। আশরাফুল আলম তা নিজের যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে সারা বাংলাদেশে নিজের পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি ভিবিন্ন সময় আলোচনা আসেন তার কর্মকান্ডের জন্য। তার নামের পাশে ভিবিন্ন উপাধি দেয়া যেতে পারে কারণ তিনি অনেক সেক্টরে কাজ করেছেন। তিনি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, গানের জগতে কাজ করেছে,মডেলিং করেছেন, বই লিখেছেন, ব্যবসা করেছেন, রাজনীতি করেছেন, সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন।
হিরো আলমের সংক্ষিপ্ত বিবরণী
মূল নামঃ আশরাফুল আলম সাঈদ
ডাকনামঃ হিরো আলম
স্ত্রীঃ সাবিহা আক্তার সুমি
ছেলেঃ কবির
মেয়েঃ আলো ও আখি
বাবাঃ আব্দুর রাজ্জাক
মাঃ আশরাফুন বেগম
জন্মঃ ১৯৮৫ সালের ২০ জানুয়ারি
জন্মস্থানঃ বগুড়া
প্রথম সিনেমাঃ মার ছক্কা
প্রথম সিনেমা মুক্তি পায়ঃ আগস্ট ১১, ২০১৭
অভিনীত চলচ্চিত্রঃ ৫+
পেশাঃ চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক,গায়ক,মডেল, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ
রাজনীতির দলঃ স্বতন্ত্র
ধর্মঃ ইসলাম
জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী
প্রাথমিক জীবন
পিতা আব্দুর রাজ্জাক ও মাতা আশরাফুন বেগমের ঘরে জন্ম নেয় আশরাফুল আলম সাঈদ ওরফে হিরো আলম ১৯৮৫ সালের ২০ জানুয়ারি। আশরাফুল আলম সাঈদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা নিজ শহর বগুড়াতে। আশরাফুল আলম জীবিকার তাগিদে ভিবিন্ন সময় ভিবিন্ন কাজ করেছেন। জীবনের প্রথম দিকে তিনি রাস্তায় রাস্তায় চানাচুর ও সিডি বিত্রি করতে। পরবর্তীতে তিন তার নিজ এলাকায় ডিশ লাইন সংযোগের ব্যবসায় জড়িত হন। সেই সময় তিনি তার প্রতিভা বিকাশ করার মত জায়গা খুজে পাচ্ছিলেন না। তিনি করবেন কিছুই বুঝতে পারতেছিলে না। তিনি ডিশ লাইনের ব্যবসার কারণে মিডিয়ার প্রতি একটা ঝুক সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে তিনি সিধান্ত নেন তিনি মিউজিক ভিডিও বানাবেন। তার শুরুটা হয়েছিল শুধুই শখের বশে। ২০১৬ সালে তিনি তার প্রথম মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করেন। সেই সঙ্গীত ভিডিও টি তিনি ইউটিউব এবং ফেইসবুকে আপলোড করেন। ইউটিউব এবং ফেইসবুকে আপলোড করার পর মিউজিক ভিডিও টি মূতুর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। সারা বাংলাদেশে এং দেশের বাহিরে তার মিউজিক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েন। তারপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। তারপর তিনি আস্তে আস্তে সফলতা ও পরিচিতি পান।
হিরো আলমের শিক্ষা জীবন
হিরো আলম প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে তেমন শিক্ষা লাভ করতে পারেন নি। যেহেতু তিন একজন নিম্ন মধ্য আয়ের ঘরের একজন সন্তান। সেহেতু তার পরিবারও খুব উচ্চ শিক্ষিত ছিল না। তিনি সপ্তম শেণী পর্যন্ত পড়েছেন। দ্রারিদ্রতার কারণে তিনি বেশি পড়াশোনা করতে পারেন নি। দ্রারিদ্রতার কারণে তিনি পড়াশোনা ছেড়ে কর্মক্ষেত্রে যোগ দেন।
হিরো আলমের চলচ্চিত্র যাত্রা
মিউজিক ভিডিওতে মডেলিং দিয়ে শুরু করা নায়ক আলম একসময় চলচ্চিত্রের হিরো হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সিনেমায় যুক্ত হন। হিরো আলমের চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ১১ আগস্ট মার ছক্কা নামক সিনেমা মুক্তির মাধ্যমে। নায়ক আলমের প্রথম সিনেমা ছিল মার ছক্কা, যেটিতে তিনি প্রধান নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। আলমের দ্বীতিয় সিনেমা এ আর মুকুল নেত্রবাদী পরিচালিত সাহসী হিরো আলম মুক্তি পায় ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর। সাহসী হিরো আলম সিনেয়া ও তিনি প্রধান চরিত্রের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। তার পর তিনি অভিনয় করেন বহুল আলোচিত সিনেমা টোকাই। যে সিনেমাটি নিয়ে সবার মাঝে অনেক আগ্রহ রয়েছে। তাছাড়া আলম আরো কিছু নতুন সিনেমায় কাজ করছেন, যা খুই তারাতারি মুক্তি পাবে সিনেমা হলে।
হিরো আলমের গানের যাত্রা
হিরো আলম একজন প্রফেশনাল গায়ক না হলে ও তিনি শখের বশে গান করে থাকেন। আশরাফুল আলম মূলত ভাইরাল গান গুলো কভার করে থাকেন। গানের জগতে আলম আলোচনায় আসেন ভাইরাল গান বাবু খাইছ গানটি গেয়ে। তার গাওয়া ভাইরাল বাবু খাইছ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। তাছাড়া তিনি ভিবিন্ন দিবস উপলক্ষ্যে গান তৈরি করে থাকে। তিনি শুধু বাংলা গানই করেন না। তিনি ভিবিন্ন দেশের ভাষায় গান গেয়ে থাকেন।
ইতোমধ্যে তিনি হিন্দি, চাইনিজ, আরবি সহ অনেক ভাষায় গান গেয়েছেন। সর্ম্পতি তিনি ঘোষণা করেছেন বিশ্বের সকল ভাষায় গান করতে চান। তিনি ভিবিন্ন ফেমাস ব্যাক্তিদের নিয়ে গান গেয়ে থাকেন। তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা খেলোড়ার সাকিব আল হাসান কে নিয়ে গান করেছেন। আরো গান করেছেন বির্তকিত মুরাদ হাসানকে নিয়ে।
হিরো আলমের রাজনীতিতে যাত্রা
হিরো আলম রাজনীতিতে এসেই সারা বাংলাদেশে আলোড়ন তৈরি করে ফেলেন। তিনি নির্বাচন করবেন সেটা শুনেই সবাই অবাক। তাও তিনি নির্বাচন করেন বাংলাদেশের সবোর্চ্চ নিবার্চন জাতীয় সংসদ নিবার্চন। আশরাফুল আলমের নির্বাচনের কথা বাংলাদেশের মিইন স্টিম মিডিয়া ভাল কভারেজ পাই সেই সময়। তিনি প্রথমে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম রাজনীতিক দল জাতীয় পাটি থেকে নিবার্চন করতে।
কিন্তু জাতীয় পাটি আলমকে প্রার্থি করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তিনি বাধ্য হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নিবার্চনে লড়াই করেন। কিন্তু সেই জাতীয় সংসদ নিবার্চনে তিন ভাল ফল করতে পারেন নি। তার ফলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়। কিন্তু তিনি পরবর্তি জাতীয় সংসদ নিবার্চনে আবারো নিবার্চন করবেন তা আগে থেকেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। তিনি জাতীয় নিবার্চনে অংশ নেয় তার নিবার্চনী এলাকা বগুড়া-৪ আসন থেকে।
লেখক আশরাফুল আলম
হিরো আলম যদিও বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেন নি। তবুও তিন তার প্রতিভার স্বক্ষর রেখেছেন প্রতিটি শাখায়। তিনি তার লেখা প্রথম বই লিখেন সমাজকে বদলে দেয়ার জন্য। আশরাফুল আলমের লেখা প্রথম বইটি তরফদার প্রকাশনী থেকে ২০১৯ সালের অমর একুশে বই মেলায় প্রকাশিত হয়। ২০১৯ সালের অমর একশে বই মেলায় হিরো আলমের বই “দৃষ্টিভঙ্গি বদলান আমরা সমাজকে বদলে দেবো” সবার আগ্রহের কেন্দবিন্দুতে ছিল। আলমের “দৃষ্টিভঙ্গি বদলান আমরা সমাজকে বদলে দেবো” বইটি সৌরভ আলম সাবিদ সম্পাদনা করেন।
আশরাফুল আলমের ব্যক্তিগত জীবন
আশরাফুল আলম সাঈদ ওরফে হিরো আলমের স্বীর নাম হল সাবিহা আক্তার সুমি। তাদের দুইটি মেয়ে সন্তান এবং একটি ছেলে সন্তান রয়েছ। আশরাফুল আলমের এক মেয়ে সন্তানের নাম আলো ও আরেক মেয়ে সন্তানের না আখি। সাবিহা আক্তার সুমি ও আলমের একমাত্র ছেলে সন্তানের নাম কবির। এই দম্পতির সংসার খুব একটা সুখের নয়। আশরাফুল আলমের স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেন। এবং থানায় অভিযোগ করেন।
শেষ কথা
বহু প্রতিভার অধিকারী হিরো আলম শত প্রতিকূলতার মাঝেও এগিয়ে যাবে আরো বহুদূর। আমরা চাই তার আরো নতুন নতুন প্রতিভার বিকাশ ঘটাক। আশরাফুল আলম সর্ম্পকে আরো বিস্তারিত তথ্য থাকলে আমাদের সাথে কমেন্টের মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন। আর কোন অভিযোগ থাকলে আমাদের জানান। আমরা সংশোধন করব।
