You are currently viewing সেলিনা হায়াৎ আইভীর জীবনী ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার
সেলিনা হায়াৎ আইভী

সেলিনা হায়াৎ আইভীর জীবনী ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার

আজকে আমরা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের গ্ণ মানুষের নেত্রী বার বার নির্বাচিত নারায়ণগঞ্জের সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। আমরা জানব নারায়ণগঞ্জ বাসীর কাছে কেন তিনি এত জনপ্রিয়, তার শক্তির উৎস কী, তার রাজনীতির দর্শন, তার শিক্ষা জীবন, তার কর্মজীবন, তার শৈশব ও কৈশর সকল কিছু। মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ুন।

এক নজরে সেলিনা হায়াৎ আইভী

নামঃ ড. সেলিনা হায়াৎ আইভী

জন্মঃ ৬ জুন ১৯৬৬ সালে

জন্ম স্থানঃ পশ্চিম দেওভোগ, নারায়ণগঞ্জ

পেশাঃ চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ

রাজনীতিক দলঃ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ

বৈবাহিক অবস্থাঃ বিবাহিত

স্বামীঃ কাজী আহসান হায়াত

ছেলেঃ  কাজী সাদমান হায়াত সীমান্ত

ছেলেঃ কাজী সারজিল হায়াত অনন্ত

পিতাঃ আলী আহাম্মদ চুনকা

মাতাঃ মমতাজ বেগম

ভাইঃ আলী রেজা রিপন

ভাইঃ আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল

বোনঃ মিনু বেগম

বোনঃ লাকি ফারহানা

ধর্মঃ ইসলাম

চুলের কালারঃ কালো

চোখের কালারঃ কালো

শরীরের কালারঃ শ্যামলা

জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী

সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রাথমিক জীবন

সেলিনা হায়াৎ আইভীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা একটি বিখ্যাত রাজনীতিক পরিবারে। সেলিনা হায়াৎ আইভীর পিতা আলী আহাম্মদ চুনকা ও মাতা মমতাজ বেগমমের ঘরে জন্ম গ্রহন করেন ৬ জুন ১৯৬৬ সালে নারায়ণগঞ্জে। আলী আহাম্মদ চুনকা ও মাতা মমতাজ বেগমমের ঘরে পাচ ছেলে মেয়ের মধ্যে সেলিনা হায়াৎ আইভী ছিল জ্যেষ্ঠ সন্তান। সেলিনা হায়াৎ আইভীর বাবা বাংলাদেশর স্বাধিনতা লাভের পর নারায়ণগঞ্জের মেয়র ছিলেন। অনেক আন্দোলন সংগ্রামের সংগে জড়িত রাজনীতিবিদ আলী আহাম্মদ চুনকার নাম।

আরো পড়ুনঃ শামীম ওসমানের জীবনী

সেলিনা হায়াৎ আইভীর শিক্ষাজীবন

সেলিনা হায়াৎ আইভীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় তার পাড়ার স্কুল দেওভোগ আখড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ার মাধ্যমে। দেওভোগ আখড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছুদিন পড়ার পর তিনি ভর্তি হন নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী স্কুলে। সেখানে তিনি ক্লাস সিক্স পর্যন্ত পড়েন। আইভি ট্যালেন্টপুলে জুনিয়র স্কলারশিপ পান মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৭৯ সালে। আইভী খুব মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ বোর্ডে স্টারমার্কসহ উত্তীর্ণ হন এস এস সি পরীক্ষায়। আইভীর বাবা মায়ের স্বপ্ন ছিল তাকে ডাক্তার বানাবে। তাই তিনি তার বাব মার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য চলে যান রাশিয়া ১৯৮৫ সালে মেডিকেলে পড়তে।

 ১৯৯২ সালে আইভী ওডেসা পিরাগোব মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। রাশিয়া থেকে মবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করার পর দেশে এসে ঢাকা মিডফোর্ট হাসপাতালে ইন্টার্নিশীপ করেন। ইন্টার্নিশীপ সম্পন্ন করার পর তিনি কয়েকটি হাসপাতালে অনারারি ডাক্তার হিসেবে সেবা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তার ডাক্তারি পেশা দীর্ঘদিন করতে পারেন নি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার কারণে। তিনি এখন দেশের প্রথম সারির রাজনীতিবিদ। অনেকে হয়ত জানেনই না আইভী একজন এমবিবি এস ডাক্তার।

আরো পড়ুনঃ আন্দালিব রহমান পার্থের জীবনী

সেলিনা হায়াৎ আইভীর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন

সেলিনা হায়াৎ আইভী পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেন কাজী আহসান হায়াতকে ১৯৯৫ সালে। আইভীর স্বামী কাজী আহসান হায়াত এর বাড়ি রাজবাড়িতে। তাদের দুইজন পুত্র সন্তান রয়েছে। একজন কাজী সাদমান হায়াত সীমান্ত এবং আরেকজন কাজী সারজিল হায়াত অনন্ত। আইভির বাবা মা ছাড়াও দুই ভাই ও দুই বোন রয়েছে। তার এক ভায়ের নাম আলী রেজা রিপন এবং আরেক ভাইয়ের নাম আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল। তার এক বোনের নাম মিনু বেগম এবং আরেক বোনের নাম লাকি ফারহানা। পারিবারিক ভাবে সেলিনা হায়াৎ আইভী একজন সুখী মানুষ।

সেলিনা হায়াৎ আইভীর রাজনীতিক জীবন

উড়ে এসে জুড়ে বসা রাজনীতিবীদ নয় সেলিনা হায়াৎ আইভী। ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে আগমন এই জনপ্রিয় নেত্রীর। আইভীর রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় বাবা আলী আহাম্মদ চুনকার হাত ধরে। যেহেতু তার বাবা একজন রাজনীতিবিদ সেহেতু তিনি রাজনীতিক আবহে বেড়ে ওঠেছেন। আইভী স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদিকা ছিলেন শহর আওয়ামীলের ১৯৯৩ সালে। নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার ইতিহাসে আইভি প্রথম নারী চেয়্যারম্যান হিসাবে জয় লাভ করেন ২০০৩ সালে। কিন্তু তার রাজনীতিক উথান হয় নারায়ণগঞ্জ প্রথম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে। আইভঈ ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নারয়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে তিনি তার রাজনীতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে নমিনেশন পান নি। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচন করবেন। 

আইভী নারায়ণগঞ্জ প্রথম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন। অবাক করা বিষয় হল সেলিনা হায়াৎ আইভীই প্রথম কোন সিটি কর্পোরেশনের নারী মেয়র। এর আগে আর কোন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নারী মেয়র নেই। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামীলীগের দাপটে রাজনীতিবিদ শামীম ওসমান এর সাথে আইভীর বিরোধ ছিল।  আইভীকে ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর দ্বীতিয় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তেমন কোন সংগ্রাম করতে হয় নি। দ্বীতীয় সিটি কর্পোরেশনে তিনি তার দল আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পান এবং সহজেই তিনি জয় লাভ করেন। দ্বীতিয় সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ ও শেষ। আগামী ১৬ জানুয়ারী ২০২২ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারে নির্বাচনে আড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।