You are currently viewing রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের জীবনী ও রাজনীতি
জিল্লুর রহমান

রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের জীবনী ও রাজনীতি

বিখ্যাত রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মাননীয় রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, যিনি ২০ মার্চ, ২০১৩ তারিখে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমানের পর তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি, যিনি পদে থেকে মৃত্যুবরণ করেন, প্রাকৃতিক কারণে প্রথম মারা যান। জিল্লুর রাহমান আরেক বিখ্যাত রাজনীতিবিদ আইভি রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৫৮ সালে। তার স্ত্রী আইভি রহমান ২০০৪ সালে ঢাকায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর মহিলা ফ্রন্ট মহিলা লীগের নেতা ছিলেন। তাদের একটি ছেলে – নাজমুল হাসান পাপন – এবং দুই মেয়ে – তানিয়া বখত এবং তনিমা বখত। পাপন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি, বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং একজন সাংসদ।

জিল্লুর রহমানের প্রাথমিক জীবন

জিল্লুর রহমান ১৯২৯ সালের ৯ মার্চ বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মেহের আলী মিয়া ছিলেন একজন বিখ্যাত আইনজীবী, তৎকালীন ময়মনসিংহ লোকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা বোর্ডের সদস্য। তিনি ১৯৪৫ সালে ভৈরব কেবি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৭ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট অফ আর্টস (আইএ) পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস ও আইন বিষয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

আন্দোলন সংগ্রামে জিল্লুর রহমান

১৯৫২ সালে, বাংলা ভাষা আন্দোলনে, জিল্লুর রহমান সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। পাকিস্তানের ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জি রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, প্রবাসে সরকারে প্রবলভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। জিল্লুর রাহমান ১৯৭২ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন এবং ১৯৭৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক চক্রান্ত পাল্টে যায়, সে সময় জিল্লুর রহমান সেনাবাহিনীর জান্তা কর্তৃক গ্রেফতার হন। তিনি চার বছর জেল খেটেছেন। মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান রহমান ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে এলজিআরডি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭০ (পাকিস্তান), ১৯৭৩, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে জিল্লুর রহমান রহমানের সর্ম্পক ও বিভিন্ন ইতিহাস

সিলেট গণভোটের প্রচারের সময় জিল্লুর রহমান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। তিনি ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ভাষা আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সমাবেশ করেন। ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বহিষ্কার করে, কিন্তু ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে এই আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। তিনি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের সময় বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ছিলেন।

তিনি আওয়ামী লীগের অধিভুক্ত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের কিশোরগঞ্জ মহকুমা ইউনিটের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারে সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশী রাজনৈতিক সংকটের সময় তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অস্থায়ী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

বিসিবি প্রসিডেন্ট নাজমুল হাসানের বাবা জিল্লুর রহমান

বাংলাদেশ ক্রিকেট বার্ডের বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসানের বাবা হল সাবেক রাস্ট্রপতি ও গণ মানুষের নেতা জনাব জিল্লুর রাহমান। নাজমুল হাসান পাপনের রাজনীতিতে আসা বাবা ও তার মা আইভি রহমানের হাত ধরেই। জি রহমান যখন মারা যান, তখন থেকে তিনি তার রাজনীতিক এলাকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের রাজনীতিতে সরব হন। পাপন তার বাবার তৈরি করা রাজনীতির ময়দানে রাজনীতি শুরু করেন। বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রাহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার নির্বাচনি এলাকা  কিশোরগঞ্জের ভৈরবকে জেলা হিসাবে রূপান্তির করবেন। কিন্তু তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের আগেই তিনি দেশের মায়ে ত্যাগ করে পরপারে পারি জমান। কিন্তু তার এই স্বপ্নকে বাস্তন করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে তারই সুযোগ্য সন্তান নাজমুল হাসান পাপন।

বাংলাদেশের সাবেক রাস্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সম্পর্কে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।

বাংলাদেশের ইতিহাসে যেকজন রাস্ট্রপতি এসেছে, তাদের মধ্য অন্যতম হলেন জনাব জিল্লুর রহমান। তার সম্পর্কে অনেকেই অনেক কিছু জানতে পারেন। যা আমাদের জানা নেই। আপনি যদি তার বিষয়ে নতুন নতুন কোন তথ্য জেনে থাকেন, তাহলে আমাদের জানাতে ভুলবেন না। আপনার মূল্যবান মতামত গুরুত্বের সাথে দেখা হবে। তাই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান।