You are currently viewing শেখ হাসিনার স্বামী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার জীবনী
এম এ ওয়াজেদ মিয়া

শেখ হাসিনার স্বামী এম এ ওয়াজেদ মিয়ার জীবনী

এম এ ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। যেটি ছিল রংপুর জেলায় পীরগঞ্জের ফতেহপুরের বিখ্যাত মিয়া বাড়ি । তার পিতা আবদুল কাদের মিয়া এবং মাতা ময়জুননেসার ছিল তিন মেয়ে ও চার ছেলে। এম এ ওয়াজেদ মিয়া ছিল চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট। তিনি শিক্ষা জীবন শুরু করেন রংপুর জেলা স্কুলে, সেখান থেকে তিনি দিয়ে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তিতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন পরে ১৯৬২সালে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ১৯৬৭ সালে তিনি ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইংল্যান্ড থেকে পদার্থবিজ্ঞানে ডক্টর অফ ফিলোসফি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।

এম এ ওয়াজেদ মিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফজলুল হক মুসলিম হল ইউনিট পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামে পরিচিত) সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৩ সালে তিনি পাকিস্তানের পারমাণবিক শক্তি কমিশনে চাকরিতে যোগ দেয়। ১৯৬৭ সালে ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কে তিনি বিয়ে করেন এবং বিয়ের পরে তিনি আওয়ামী লীগে রাজনৈতিল কোনও সক্রিয় অফিসিয়াল ভূমিকা পালন করেননি। তিনি ১৯৭৫-১৯৮২ সালের সময়কালে ভারতের পারমাণবিক শক্তি কমিশনের নয়াদিল্লি ভিত্তিক পরীক্ষাগারে গবেষণা কাজে নিযুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশে ফিরে আসার পরে তিনি বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশনে যোগদান করেন এবং ১৯৯৯ সালে এর চেয়ারম্যান হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।

এক নজরে এম এ ওয়াজেদ মিয়া

* মূল নামঃ এম এ ওয়াজেদ মিয়া
* ডাক নামঃ সুধা
* জন্মঃ ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ সালে
* জন্মস্থানঃ ফতেহ পুর, পীরগঞ্জ উপজেলা, রংপুর
* পেশাঃ পরমাণু বিজ্ঞানী
* মৃত্যুঃ ৯ মে ২০০৯ সালে
* মৃত্যুর স্থানঃ ঢাকা স্কায়ার হাসপাতাল

পরিবার

* বাবাঃ আব্দুল কাদের মিয়া
* মাতাঃ ময়েজুন্নেসা
* ভাইঃ ৩ জন
* বোনঃ ৩ জন
* বৈবাহিক অবস্থাঃ বিবাহিত
* বিয়ে করেনঃ ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর
* স্ত্রীঃ শেখ হাসিনা
* সন্তানঃ ১ ছেলে ও ১ মেয়ে
* ছেলের নামঃ সজীব ওয়াজেদ জয়
* মেয়ের নামঃ সায়মা ওয়াজেদ পুতুল
* শশুরঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

পড়াশোনা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

* প্রাথমিকঃ চককরিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
* মেট্রিকুলেশনঃ রংপুর জিলা স্কুল
* মেট্রিকুলেশন পাশ করেনঃ ১৯৫৬ সালে
* ইন্টারমিডিয়েটঃ রাজশাহী সরকারি কলেজ
* ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেনঃ ১৯৫৮ সালে
* এমএসসিঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
* এমএসসির বিষয়ঃ পদার্থবিজ্ঞান
* ডক্টরেট ডিগ্রিঃ লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়
* ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেনঃ ১৯৬৭ সালে

ডাঃ এম এ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যু

আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন পারমাণবিক বিজ্ঞানী, ডাঃ এমএ ওয়াজেদ মিয়া, ২০০৯ সালের ৯ই মে , বিকেল ৪ টা ২৫ মিনিটে নগরীর নগরীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। তিনি দীর্ঘদন কিডনির সমস্যাসহ হ্রদরোগ ও শ্বাসকস্টে ভুগছিলেন। মৃতু কালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।  

এমএ ওয়াজেদ মিয়া বৈজ্ঞানিক অঙ্গনে পেশাদারিত্বের জন্য বেশি পরিচিত, তবে ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব এবং সমসাময়িকরাও ছাত্রনেতা হিসাবে তাঁর ভূমিকার সাথে পরিচিত ছিলেন। একাধিক বন্ধু এবং সমসাময়িকরা বলেছেন যে তাঁর গুণাবলী তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের সহ-সভাপতির পদ অর্জন করতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু তাঁর একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং একাডেমিক অনুগতির কারণে তিনি পরমাণু বিজ্ঞানী হয়ে ওঠেন । তিনি  দীর্ঘ কর্মজীবনের সময়  জার্মানি ও ভারত সহ বিভিন্ন দেশে বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় গবেষক ও সহযোগী হিসাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং দেশের পারমাণবিক শক্তি কমিশনের  দায়িত্বে ছিলেন।

তিনি সর্বদা ব্যক্তিগত জীবনে নিচু প্রোফাইল বজায় রাখার চেষ্টা করেছিলেন, খুব সাধারণ জীবনযাপন করেছিলেন এবং মমতাময়ী ব্যক্তি ছিলেন তবে অন্যায়ের সাথে কখনই আপস করেননি। তিনি ভিবিন্ন সময় একাধিক বই রচনা করেছিলেন।ডঃ ওয়াজেদ মিয়া বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পারমাণবিক বিজ্ঞান সম্পর্কিত প্রকাশনা ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিষয়ক একাধিক বই সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে রচনা করেছিলেন। ওয়াজেদ মিয়ার যোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইটি ইঞ্জিনিয়ার এবং তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল আন্তর্জাতিক অটিজম বিশেষজ্ঞ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রর বাণী

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী (আইসিটি) জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন যে বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ডঃ এম এ ওয়াজেদ মিয়া একজন সৎ, নম্র ও সাদা মনের মানুষ ছিলেন। তিনি তার কর্মজীবন জুড়ে বিপুল প্রতিভা এবং সৃজনশীলতার দেশ, জাতি এবং মানুষের কল্যাণে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন।

আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়া ক্ষমতার খুব কাছাকাছি থেকেও কখনও শক্তি দেখাননি বলে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি তাঁর জীবনের অন্যতম বড় দিক ছিল। তিনি ছিলেন নম্র, নম্র, স্বভাবজাত এবং উদার মানুষ।ডঃ ওয়াজেদ মিয়াকে তীক্ষ্ণ প্রতিভা এবং রাজনৈতিকভাবে সচেতন ব্যক্তি হিসাবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় হাইওয়েতে ডাঃ ওয়াজেদ সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

এম এ ওয়াজেদ মিয়া বাঙালি অন্তরে থাকবে চিরকাল

বাংলাদেশের সবচেয়ে নামকরা  ও দেশবরেন্য পারমাণবিক বিজ্ঞানী ডাঃ এম এ ওয়াজেদ মিয়া বাঙালির অন্তরে জায়গা করে নিয়েছে তার কর্মের মাধ্যমে । তিনি এতবড় একজন বিজ্ঞানী হয়েও খুব সাধারণ জীবন যাপন করতে। তার মধ্যে ছিল না কোন অহংকার বোধ, সকলকেই খুব আপন করে নিতে পারতেন। এই মহান মানুষ চাইলেই বিলাশি ভাবে চলাফেরা করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা করেন নি । সাধারণত বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা খুব একটা সুনাম অর্জন করতে পারে নি কিন্তু ডাঃ এম এ ওয়াজেদ মিয়া ছিল অন্যদের থেকে আলাদা ও অনন্য। দেশবরেন্য এই পারমাণবিক বিজ্ঞানী রেখে গেছেন সুযোগ্য দুই সন্তান । একজন দেশের আইটি সেক্টরকে সামনে থেকে সফল্ভাবে এগিয়ে নিচ্ছেন । আরেকজন দেশের সুবিধা বঞ্চিত ও অবহেলিত শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন দেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।