You are currently viewing ইলিয়াস কাঞ্চন এর জীবনী ও লাইফস্টাইল
ইলিয়াস কাঞ্চন

ইলিয়াস কাঞ্চন এর জীবনী ও লাইফস্টাইল

বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের এক অভিস্মরণীয় নাম ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি আরেকটি বিশেষ কারণে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন, সেটি হল নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের জন্য। ব্যক্তি জীবনে ও ইলিয়াস কাঞ্চন একজন ধার্মিক ও সম্মানিত ব্যাক্তি। আজকে আমরা বাংলার এই গুণী অভিনেতা ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রাণভূমড়া জীবনী সর্স্পকে বিস্তারিত জানব। ইলিয়াস কাঞ্চন এর জীবনী ও লাইফস্টাইল সর্ম্পকে জানতে চাইলে আমাদের লেখাটি পড়তে পারেন।

এক নজরে ইলিয়াস কাঞ্চন

মূলনামঃ ইদ্রিস আলী

পরিচিত নামঃ ইলিয়াস কাঞ্চন

ডাকনামঃ কাঞ্চন

জন্মঃ ২৪ ডিসেম্বর ১৯৫৬

জন্মস্থানঃ করিমগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ

বর্তমান বসবাসঃ ঢাকা, বাংলাদেশ

পেশাঃ সংগঠক, অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক

সভাপতিঃ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি (২০২২-২০২১)

প্রতিষ্ঠাতাঃ নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন

চলচ্চিত্রে অভিষেকঃ  ১৯৭৭

প্রথম সিনেমাঃ বসুন্ধরা

র্টানিং পয়েন্টঃ বেদের মেয়ে জোছনা

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ স্নাতক(সমাজবিজ্ঞান)

লিঙ্গঃ পুরুষ

ভাষাঃ বাংলা

ধর্মঃ ইসলাম

জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী

পিতাঃ হাজি আব্দুল আলী

মাতাঃ সরুফা খাতুন

বৈবাহিক অবস্থাঃ বিবাহিত

প্রথম স্ত্রীঃ জাহানারা কাঞ্চান

প্রথম স্ত্রী মারা যায়ঃ ১৯৯৩

দ্বিতীয় স্ত্রীঃ পারভীন সুলতানা দিতি

দ্বিতীয় মারা যায়ঃ ২০১৬

সন্তানঃ ২

ছেলেঃ মীরাজুল মঈন জয়

মেয়েঃ ইসরাত জাহান ইমা

ভাই-বোনঃ জানা নেই

ইলিয়াস কাঞ্চন এর প্রাথমিক ও ব্যক্তগত জীবন

ইদ্রিস আলী যিনি ইলিয়াস কাঞ্চন নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশী অভিনেতা এবং সমাজ কর্মী। কাঞ্চন কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার আশুতিয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ২৪ ডিসেম্বর ১৯৫৬ সালে। তার পিতা ও মাতার নাম হাজি আব্দুল আলী ও সরুফা খাতুন। ইলিয়াস কাঞ্চন প্রথম বিয়ে করেন ১৯৭৯ সালে জাহানারা কাঞ্চনকে। জাহানারা কাঞ্চন ১৯৯৩ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় চট্টগ্রামের অদূরে চন্দনাইশে। ইলিয়াস কাঞ্চনের এক মেয়ে ইসরাত জাহান ইমা ও এক ছেলে মীরাজুল মঈন জয় রয়েছে। তার মেয়ে ইসরাত জাহান ইমা ইতোমধ্যে ইংল্যান্ড থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছেন এবং ছেলে মিরাজুল মঈন জয়ও এ বছর ইংল্যান্ড থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।

আরো জানুনঃ নায়ক আলমগীরের জীবনী

ইলিয়াস কাঞ্চন এর চলচ্চিত্র জীবন

কাঞ্চন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ১৯৭৭ সালে চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তার প্রথম চলচ্চিত্র হল চলচ্চিত্র পরিচালক সুভাষ দত্ত পরিচালিত বসুন্ধরা। বাংলাদেশের একজন সড়ক নিরাপত্তা যোদ্ধা ইলিয়াস কাঞ্চন ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে ৩৫০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। 

 এর মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলি হল পরিনিতা, শেষ উত্তর, ভেজা চোখ, আঁখি মিলন, বেদের মে জোৎস্না, শেষ রোখা, বাবা আমার বাবা, মায়ার স্বপ্ন, নিরন্তর শাস্তে ইত্যাদি। তার প্রথম টেলিফিল্ম হল ‘নায়ক’। তিনি একজন চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজকও। সড়ক দুর্ঘটনার ওপর নির্মিত ‘নাকফুল’ নাটকটি দেশের দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

আরো জানুনঃ চঞ্চল চৌধুরীর জীবনী

নিরাপদ সড়ক চাই প্রতিষ্ঠা

কাঞ্চন ২২ অক্টোবর ১৯৯৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তার স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর ১৯৯৩ সালে একটি সামাজিক আন্দোলন “নিরাপদ সড়ক চাই” (আমরা নিরাপদ সড়ক চাই) প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে তিনি নিরাপদ সড়ক চাই স্লোগান নিয়ে তার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। কাঞ্চন সারাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যত্রও আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এখন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৮০ টির বেশি শাখা রয়েছে। 

বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে ২২ অক্টোবরকে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। ২২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক সড়ক নিরাপত্তা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার তার প্রস্তাব এখন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিবেচনাধীন। জনাব কাঞ্চন জাহনারা কাঞ্চন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়, সুজানগর পাবনা, চাঁদপাশা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বাবুগঞ্জ, বরিশাল এবং জানে জাহান মাদ্রাসা, করিমগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা। ইলিয়াস কাঞ্চন বহুবার সৌদি আরব, ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, জাপান, পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব  আমিরাত সফর করেছেন।

আরো জানুনঃ নায়ক ফারুকের জীবনী

নিরাপদ সড়ক চাই

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত

বাংলাদেশ চলচ্চিত্রকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ইলিয়াস কাঞ্চন ২০২২ সালের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে  সভাপতি পদে নির্বাচন করেন। যেখানে তিনি সভাপতি পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়। তার বিপরীতে নির্বাচন করে পরাজিত হন চলচ্চিত্রের খল অভিনেতা ও সেই সময়ের রানিং সভাপতি মিশা সওদাগর। কাঞ্চন সভাপতি পদে জয় লাভ করার পরে পরাজিত প্রার্থি মিশা সওদাগর তাকে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানায়।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি

পুরস্কার ও সম্মাননা

পরিণীতা (১৯৮৬) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তার সমাজসেবার জন্য একুশে পদকে ভূষিত হন। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শত শত পুরস্কার পেয়েছেন। আর কয়েকটি পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, শিশু পুরস্কার, জিয়া স্বর্ণ পুরস্কার, শের-ই-বাংলা স্মৃতি পদক, চলচ্চিত্র দর্শন পুরস্কার, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি পুরস্কার, জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ সংস্থা পুরস্কার ইত্যাদি।