You are currently viewing শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে শেখ রেহানার জীবনী ও পরিবার
শেখ রেহানা

শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে শেখ রেহানার জীবনী ও পরিবার

শেখ রেহানা যার জন্ম ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫ সাল। তিনি বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এর ছোট কন্যা। তিনি আমাদের প্রাণ প্রিয় দেশ রত্ন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র আদরের বোন। তিনি পেশায় একজন গৃহিনী। তার স্বামীর নাম জনাব শফিক আহমেদ সিদ্দিক। তিনি ৩ সন্তানের জননী। তার একমাত্র ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রুপন্তি, বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক যিনি ব্রিটিশ সংসদ সদস্য।

শেখ রেহানা এমন একজন মহিয়সী নারী যার ভূমিকা হচ্ছে অনেক বিশাল। আর তার এই বিশাল ভূমিকার কারণেই আজকে আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোকবর্তিকা হাতে পেয়েছেন। শেখ রেহানা এমন একজন ব্যাক্তি যিনি বেগম মুজিবের একজন প্রতিচ্ছবি। তার জীবন এর ব্যাক্তিগত দিক আমরা তেমন ভাবে জানতে পারিনি, তবে যতুটুকু জানতে পেরেছি তা থেকে বুঝা যায় তার জীবনের বেপকতা সম্পর্কে। কারণ তিনি একজন সাধারণ মানুষের মতো জীবন যাপন করতো আর তিনি খুবই অতিথি আপ্যায়ণ করতেন। আর এই কারণে তিনি সবার কাছে খুবই প্রিয় একজন ছিলেন।

এক নজরে শেখ রেহানা

মূলনামঃ শেখ রেহানা

ডাকনামঃ রেহানা

জন্মঃ ১৯৫৫ সালে ১৩ সেপ্টেম্বর

জন্মস্থানঃ ধানমন্ডী, ঢাকা, বাংলাদেশ

আদি বাড়িঃ গোপালগঞ্জ, বাংলাদেশ

পেশাঃ গৃহিণী

ধর্মঃ ইসলাম

জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী

বাবাঃ শেখ মুজিবুর রহমান

মাঃ শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব

ভাইঃ শেখ রাসেল, শেখ কামাল, শেখ জামাল

বোনঃ শেখ হাসিনা

বৈবাহিক অবস্থাঃ বিবাহিত

স্বামীঃ শফিক আহমেদ সিদ্দিক

সন্তানঃ ১ ছেলে ২ মেয়ে

ছেলের নামঃ রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি

বড় মেয়েঃ টিউলিপ সিদ্দিক

ছোট মেয়েঃ আজমিনা সিদ্দিক রুপন্তী

পারিবারিক রাজনৈতিক দলঃ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ

চুলের কালারঃ কাল

শরীরের কালারঃ শ্যামলা

চোখের কালারঃ কাল

শেখ রেহানা প্রাথমিক জীবন

তিনি তার জীবনে অনেক দুঃখ কষ্টের মাঝে কাটিয়েছেন।তিনি তার বাবার আদর ভালোবাসা তেমন একটা পায়নি। তিনি তার মায়ের ভালোবাসা থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন। ছোট থেকেই তিনি জীবনের সাথে অনেক লড়াই করে গেছেন। তিনি হচ্ছেন একজন মহিয়সী নারী।  তিনি বিশাল ক্ষমতার মাঝে থাকা সত্ত্বেও কখনো ক্ষমতার অহংকার দেখাতেন না।  তিনি একদম সাধারণ ভাবে জীবনযাপন করতেন। তিনি একজন রত্নগৰ্ভা মা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলে থাকা স্বত্তেও তিনি কখনো রাজনীতিতে নিজেকে জড়াননি। কিন্তু তিনি সবসময় মুক্তিযোদ্ধের চেতনা আর সঠিক গণতন্ত্র গঠনের জন্য আওয়ামীলীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ সকল রাজনীতিবিদদের বিভিন্ন ভাবে অনুপ্রেরণা ও সাহায্য সহযোগিতা করে গেছেন। আর তিনি ছিলেন তার বড় বোন শেখ হাসিনার কাছে খুবই আদরের।

তিনি একটি রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও কখন তিনি সরাসরি রাজনীতিতে নিজেকে জড়াননি। তবে তাকে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীকে সব সময় “ছোট আপা ” বলে ডাকতেন। বঙ্গবন্ধু যেমন সবসময় দেশের মানুষের কথা চিন্তা করতেন, এই দেশের জনগণের জন্য মুক্তির গান গাইতেন, ঠিক তেমনি ভাবে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ গুলি শেষ করার জন্য শেখ রেহানা এবং শেখ হাসিনা এদেশের মানুষের জন্য কাজ করে আসছেন। একজন কাজকরেছে নিজের জীবনের মায়া না ওরে সকলের সামনে আরেক জন আড়ালে থেকে সকলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এত ক্ষমতার মধ্যে থেকেও শেখ রেহানা সব সময় সৎ ভাবে চলাফেরা করেছেন। তার ভেতর কখনো অহংকারের কোনো ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি।

বড়ো বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় তার উদারতার কথা বলে এসেছেন। তিনি কিভাবে সংগ্রাম করে তার তিন সন্তানকে সঠিক ভাবে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছেন। তার তিন সন্তানের মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একজন গুরুত্ব পূর্ণ  এমপি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।তিনি তার মহান উদারতার প্রকাশ ঘটান যখন তার নিজের নামের ২০০ কোটি টাকামূল্যের ঢাকার ধানমন্ডির ৬ নম্বর রোডের ২১ নম্বর বাড়িটা যখন দেশের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি উৎসর্গ করেন। তিনি সব সময় এই দেশের মানুষদের  অনেক ভালোবেসেছেন

শেখ রেহানা অজানা কথা

শেখ রেহানা এবং জনাব ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক সাথে ১৯৭৪ সালে বিবাহের কথা পারিবারিক ভাবে পাকা করা হয়েছিল। তিনি জার্মানি থেকে দেশে আসলে তাদের বিয়ে হবার কথা ছিল।  কিন্তু ১৫ অগাস্ট এর সেই কালো দিনের হত্যাকাণ্ডের পর তার আর দেশে আশা হয় নি। জনাব ড. শফিক তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কজন শিক্ষক ছিলেন। সেই সুবাদে তিনি পিএইচডি করার জন্য ব্রিটেনের সাউদাটম্পন ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা করছিলেন। তখন ১৯৭৭ সালের জুলাই মাসের শেষ স্পথাহে তিনি লন্ডনের কিলবার্নে খোকা চাচার বাড়িতে যান। এবং সেখানে তার সাথে শেখ রেহানার বিবাহ সম্পূর্ণ হয়। তখন প্রিয় বোন শেখ রেহানার বিয়েতে শেখ হাসিনা টিকিটের টাকা জোগাড় করতে পারেন নি বলে বিয়েতে থাকতে পারেন নি।

বিয়ের পরে শেখ রেহানা এবং জনাব ড. শফিক সিদ্দিক বিভিন্ন ধরণের সংকট মুকাবিলা করে সামনের দিকে অগ্রসর হন।  বিয়ের কিছুদিন পর স্বামীর সাথে সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটিতে চলে আসেন শেখ রেহানা। তাদের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল ছিলোনা বলে এক একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকার সামর্থ ছিল না। তিনি তার জীবনে অনেক পরিমান সংগ্রাম করেছেন। যৌবনের যেই বয়সে একটি নারী উচ্ছাসিত হতে থাকেন ঠিক সেই বয়সে তিনি অনেক হোঁচট খেয়েছেন।  জীবনের অনেকটা পথ তাকে বিভিন্নভাবে লড়াই করে কাটাতে হয়েছে। তিনি সবসময় সংগ্রামেরসাথে জীবন অতিবাহিত করেছেন। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে অভাবে থেকেও একজন মানুষ সৎ ভাবে বেচে থাকতে পারেন। সকল প্রতিকূলতা পার করে তিনি তার ৩ সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলেছেন।

আর এই কারণেই তিনি একজন রত্নগর্ভা মা। তার কনিষ্ঠ কন্যা আজমিনা সদ্দিক অবন্তী বর্তমানে লন্ডনের কন্ট্রোল রিস্ক এর অ্যানালিসিস সম্পাদক হিসেবে আছেন। তার একমাত্র পুত্র সন্তান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি লন্ডনের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত আছেন। ছেলেমেয়েরা এত বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করা সত্ত্বেও তার মধ্যে কখনো কোনো অহংকাররের প্রকাশ ঘটে নাই।  তিনি অতীতেও যেমন সাদাসিধে ভাবে চলাফেরা করতেন বর্তমানেও তিনি সাদাসিধে ভাবে চলাফেরা করেন। শেখ রেহানা বর্তমানে ৬৭ বছরে পদার্পন করেছেন। এমন একজন মহিয়সী নারীর জন্ম যাতে সর্ব যুগে হয়। তিনি যখন লন্ডনে বসবাস করতেন তখন তিনি লন্ডনের মেট্রো তে আর বাসে যাতায়াত করতেন। শেখ রেহানা এই দেশের প্রতি নারীর জন্য একজন অনুপ্ৰনার প্রাণ। তার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।