You are currently viewing ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম এর জীবনী। মমতাজের গান ও ক্যারিয়ার
মমতাজ বেগম

ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম এর জীবনী। মমতাজের গান ও ক্যারিয়ার

আপনাদের অনেকেরই আগ্রহ থাকে বাংলাদেশের লিজেন্ডারি শিল্পিদের সম্পর্কে জানার। আপনাদের আগ্রহের কারণেই আমরা দেশের প্রথম সারির সেলিব্রটিদের বায়োগ্রাফি লিখছি নিয়মিত। আজকে আমরা জানব বাংলাদেশের গানের ইতিহাসে সফল একজন গায়িকা সম্পর্কে। যাকে বলা হয় বাংলা ফোক গানের রাণী বা ফোক সম্রাজ্ঞী। তিনি হলেন লোক সঙ্গীতের মধ্যমণী মমতাজ বেগম। আপনারা এই প্রবন্ধ থেকে বাংলা গানের ফোক সম্রাজ্ঞী খ্যাত মমতাজ বেগমের জীবনের অনেক অজানা ও জানা বিষয়ে জানতে পারবে। আশা করি প্রবন্ধটি মনযোগ দিয়ে পড়বেন।

মমতাজ বেগম হলেন একজন বাংলাদেশী গায়ক এবং বাংলা লোক সঙ্গীতের মধ্যমণী। মমতাজ বেগমকে বাংলা ফোক গানের সম্রাজ্ঞী বলা হয়। তিনি দ্য মিউজিক কুইন নামেও পরিচিত। বিখ্যাত গায়িকা মমতাজ বেগম ১৯৭৪ সালের ৫ মে মানিকগঞ্জের সিংগাইরের জয়মনটপ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার শৈশবের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন তার বাবা মধু বয়াতির কাছে গান শিখতে, যিনি একজন গায়ক ও ছিলেন। জ্যোতিষীদের মতে মমতাজের মিথুন রাশি। মমতাজ লোকগানের শিক্ষক আবদুর রশিদ সরকারকে বিয়ে করেন প্রথম।

মমতাজের গানের শিক্ষক

মমতাজ বেগমের সঙ্গীতে দীক্ষা হয় প্রথম দিকে যখন তিনি একটি শিশু ছিলেন। তিনি তার বাবার সাথে, প্রথমে একজন শ্রোতা সদস্য হিসাবে গান শুনতেন। তারপর তার বাবা বাবা মধু বয়াতির কাছে, তারপর মাতাল রাজ্জাক দেওয়ানের কাছে এবং তারপর আবদুর রশিদ সরকারের কাছে গান শিখেছিলেন। তিনি যে ধরনের সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন যেমন মারফতি, বৈঠোকি এবং মুর্শিদী।

মমতাজ বেগমের ক্যারিয়ার

প্রাথমিকভাবে মমতাজ সম্পূর্ণ নিজের অর্থায়নে অ্যালবাম প্রকাশ করতেন। কিছু অ্যালবাম জনপ্রিয় হওয়ার পরে তাকে প্রযোজকরা নতুন গানের জন্য চুক্তিবদ্ধ করাতে থাকে, যদিও চুক্তিতে বলা হত যে অ্যালবাম হিট না করলে টাকা ফেরত দিতে হবে। কিন্তু তার সকল অ্যালবামই সফলতা পাই দর্শকদের কাছে। তারপর তিনি এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে তাকে এক দিনে দুটি অ্যালবাম ও রেকর্ড করতে হয়েছে। দুই দশকের তার গানের ক্যারিয়ারে তিনি প্রায় ৮০০ টি অ্যালবাম রেকর্ড করেছেন। যা বাংলাদেশের গানের ইন্ডাষ্টিতে রেকর্ড়।

মমতাজ বাংলাদেশে, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেসহ বিভিন্ন দেশে কনসার্ট করেছেন। তিনি বাংলাদেশী প্রবাসী সম্প্রদায়ের জন্য অনেক অনুষ্ঠান করেছেন, তিনি প্রবাসি বাংলাদেশীদের কাছে একজন পরিচিত মুখ। মমতাজ প্রিয়া তুমি সুখী হউ (২০০৪) চলচ্চিত্রের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। সেরা সংগীতশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ ও লাভ করেন তিনি। তিনি শাহ আলম সরকারের সাথে বৈশাখী টিভিতে “পালা গান” তে প্রথম টেলিভিশন শো করেন।

আরো পড়ুনঃ নগর বাউল জেমসের জীবনী

মমতাজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার

মমতাজ বেগম বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও সমৃদ্ধ । মমতাজ বেগম বাংলাদেশে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০০৯ সালে। ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৪ সালে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার নিবার্চনি এলাকায় মানিকগঞ্জে তিনি খুবই জনপ্রিয় সংসদ সদস্য।

তিনি গানের মাধ্যমে যেমন সবার মন জয় করতে পেরেছেন তেমনি ভাবে রাজনীতির ময়দানেও সবার মন জয়  করতে পেরেছেন। তিনি সাধারণত তার নির্বাচনি এলাকাতে থাকেন। তার এলাকার মানুষের খোজ খবর নিয়ে থাকেন নিয়মিত। তার নির্বাচনি এলাকার মানুষ বিশ্বাস করে তাদের সবার প্রিয় মমতাজ একদিন মন্ত্রী হয়ে সবার সেবা করতে। তার এলাকা একটি উন্নয়নের রোল মডেল হবে।

ডক্টরেট ডিগ্রি পান ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ

ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগমকে সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ভারতের তামিলনাড়ুর ‘গ্লোবাল হিউম্যান পিস ইউনিভার্সিটি’ সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি উপাধি প্রধান করেন ১০ এপ্রিল ২০২১ সালে। এই তথ্যটি নিশ্চিত করেন মমতাজ নিজেই। তিনি ১২ এপ্রিল এই সংবাদটি সকলকে জানান ফেসবুক পেজের মাধ্যমে। তিনি সেখানে উল্লেখ্য করেন পৃথিবীতে একমাত্র সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রকাশিত আট শতাধিক অ্যালবামের বিশ্ব রেকর্ড গান করেন তিনি। এই সম্মাননার জন্য তাকে অনেক এসে ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

সেবামৃলক কাজ

মমতাজ বেগম বিশ্বাস করেন সেবাই মানুষের আসল কাজ। তিনি তার নিবার্চনি একালায় অনেক সেবামূলক করে থাকেন।  মমতাজ তার নিজ গ্রাম অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট বিশাল মমতাজ চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি হাসপাতালটি তার বাবা মধু বয়াতির স্মরণে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কারণ তার বাবা মধু বয়াতি দারিদ্র্যের কারণে ছানি অপারেশনের সামর্থ্য না থাকায় দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন।

তিনি চাই আর কোন মানুষ যাতে দারিদ্রের কারণে বিনা চিকিসায় মারা না যায়। তাই তিনি ভিবিন্ন জায়গায় অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে নিরলসভাবে। তিনি শুধু দরিদ্রদের জন্য চিকিসার ই ব্যবস্তাই করে নাই। তিনি কাজ করে যাচ্ছে দরিদ্ররা যাতে সঠিক শিক্ষা লাভ করতে পারে সেই লক্ষ্যে। তিনি বিশ্বাস করেন শিক্ষাই জাতির প্রধান অস্ত্র। তাই তিনি শিক্ষাকে প্রধান অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।

মমতাজ বেগমের সোসাল মিডিয়াঃ

ফেইসবুক