You are currently viewing মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স ও ইসলামের বিধান
মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স

মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স ও ইসলামের বিধান

মেয়েদের বিবাহযোগ্য বয়স বা বিবাহের বয়স নিয়ে আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। ইসলামে মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স নিয়ে স্পষ্ট ব্যখ্যা রয়েছে। মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের একটি একটি নির্দিষ্ট বয়স সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বিয়ে একটি সামাজিক ব্যাপার যেটিতে সমাজ ও পরিবারের অনেক কিছু নির্ভর করে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকে বিয়ের ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতিটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ বয়স থেকে।

বিজ্ঞান বলে সাধারণত ১৮ বছর হলে বিয়ে করার জন্য উপযুক্ত কারণ এই সময়ের মধ্যে মেয়েরা মানসিক ও শারীরিক ভাবে প্রস্তুত হয়। মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে তারা মানসিক ও শারীরিক ভাবে প্রস্তুত আছে কিনা তা সবার আগে দেখতে হবে। তা না হলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে মেয়েরা। তাছাড়া বিচ্ছেদের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে মেয়েরা মানসিক ও শারীরিক ভাবে প্রস্তুত না হলে এমন কী মৃত্যুর ঝুঁকি ও আছে।

বাংলাদেশ সরকারের আইন অনু্যায়ী মেয়েদের সঠিক বিয়ের বয়স

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন অনুযায়ী মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ বছর। তবে পিতা মাতার সম্মতিতে বিশেষ ক্ষেত্রে সর্বোত্তম স্বার্থে ১৮ বছরে নিচের মেয়েদের বিবাহ দিতে পারবেন। সেটি আদালতের অনুম্মতি ক্রমে হতে হবে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের খসড়া বলা হয়েছে ক্তিসংগত কারণে মা-বাবা বা আদালতের সম্মতিতে ১৬ বছরে মেয়েদেরকে বিয়ে দিতে পারবে সেটিকে বাল্য বিবাহ বলে ধরা হবে না। সরকার চেয়েছিল সবার অনুরুধে মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স ১৬ করতে কিন্তু অনেকে এর বিরোধিতা করায় মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ ই রেখেছে। সেক্ষেত্রে মা-বাবা বা আদালতের সম্মতিতে ১৬ বছরে বিয়ে দিতে পারবে। বাংলাদেশে সাধারণত ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে দেয়াকা বাল্যবিবাহ বলা হয়ে থাকে।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলেন মেয়েদের ইউটেরাস, ওভারি, পেলভিস পরিপক্ব হয় ১৮ বছরের পর। মেয়েদের ইউটেরাস, ওভারি, পেলভিস পরিপক্ব না হলে সন্তান নিতে সমস্যা হয়। বাংলাদেশ সরকার মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স নিয়ে যে আইন রয়েছ তা যদি কেউ না মানে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে শাস্তির ব্যাবস্থা থাকলেও জাতিসংঘের শিশু তহবিল কর্তৃক প্রকাশিত ২০১৪ সালের একটি রির্পোট অনুযায়ী ৬৬ শতাংশ মেয়েদের ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়ে যায়। এই প্রতিবেদন থেকে অনেকে আশংখা প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ সরকারের বাল্যবিবাহ আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন। শুধু আইন থাকলেই হবে না তা কঠোরভাবে মানতে বাধ্য করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ ভালবাসা দিবসের এস এম এস ও শুভেচ্ছা বার্তা

ইসলামের আইন অনুযায়ী মেয়েদের সঠিক বিয়ের বয়স

ইসলামী আইন অনুযায়ী মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স নেই। বিয়ের ক্ষত্রে বলা হয়েছে একজন মেয়ে যদি বালেগ হয় তাহলে তার বিয়ে দেয়া যাবে। সেক্ষেত্রে মেয়ে কত বছর বয়সে বালেগ হবে বা শারীরিক গঠন বিয়ের যোগ্যতা বহন করবে তা বলা যাবে না। অনেকের দেখা যায় ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬ বছর বয়সে শারীরিক গঠন বিয়ের উপযোগী হয়। সাধারণত বয়ঃসন্ধিক বৈশিষ্টসমূহকে বিয়ের জন্য শারীরিক ভাবে প্রস্তুত কিনা দেখা হয়। তবে ইসলামে বলে মেয়েসের বালেগ হলেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া উচিত কারণ দ্বীন দুনিয়া উভয়ের জন্যই ভাই সময়মত বিয়ে দেওয়া। হাদিসে এসেছে বিয়ের ক্ষেত্রে বেশি পার্থক্য থাকা উচিত নয় পাত্র পাত্রীদের।

এক হাদিসে বিয়ে নিয়ে আমাদের ইসলামের শেষ নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

ﻳَﺎﻣَﻌْﺸَﺮَ ﺍﻟﺸَّﺒَﺎﺏِ ﻣَﻦِ ﺍﺳْﺘَﻄَﺎﻉَ ﻣِﻨْﻜُﻢُ ﺍﻟْﺒَﺎﺀَﺓَ ﻓَﻠْﻴَﺘَﺰَﻭَّﺝْ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُﺃَﻏَﺾُّ ﻟِﻠْﺒَﺼَﺮِ ﻭَﺃَﺣْﺼَﻦُ ﻟِﻠْﻔَﺮْﺝِ ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﻌَﻠَﻴْﻪِﺑِﺎﻟﺼَّﻮْﻡِ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻟَﻪُ ﻭِﺟَﺎﺀٌ

যার অর্থ হলঃ যাদের বিবাহ করার সামর্থ্য আছে তাদের বিবাহ করা অবশ্যই কর্তব্য। কারণ বিবাহ হয় যৌনাঙ্গের পবিত্রতা রক্ষাকারী, দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণকারী। যাদের বিবাহ করার সামথ্য নেই তাদের রোজা রাখা উচিত কারণ রোজা যৌবনকে নিয়ন্ত্র করতে পারে। ( মুসলিম ১৪০০, বুখারী ৫০৬৫)

হাদিস শরিফের আরেকটি হাসিসে এসেছে তোমাদের সন্তান যদি বালেগ হয় তাদেরকে উপযুক্ত প্রাত্তের সাথে বিয়ে দেও তা না হলে সন্তান যদি কোন পাপ কাজ করে সেই দায়ভার তার পিতার উপর বর্তাবে।

আমাদের অনেকেই আছি যারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে বিয়ে করতে চাই না। তা সম্পর্ণ ভুল ধারণা কারণ স্বয়ং আল্লাহ বলেন প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব আমার তুমি বিয়ে কর। আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তাআল্লাহ বলেন তুমি ধনী হতে চাও তাহলে বিয়ে করে ফেল। বিয়ের পরের অভাব আমি দূর করে দিব। মহান আল্লাহ বলেন তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আমার কর্তব্য তাদের মধ্যে একটি হল যে ব্যক্তি বিবাহ করার মাধ্যমে নিজেকে পবিত্র রাখতে চায়।

আরো পড়ুনঃ বিশ্ব ভালবাসা দিবসের ইতিহাস

কোন দেশে মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স কেমন ?

সাধারণত বিশ্ব স্বীকৃত বিয়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মেয়েদের বিয়ের সঠিক বয়স ১৮ বছরকেই বলা হয়ে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী বিয়ের বয়স নির্ধারণ করে থাকে। শুধুমাত্র সৌদি আরব একমাত্র দেশ যাদের বিয়ের ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট বয়স সীমা নেই। বিশ্বের কয়েকটি দেশের মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স নিচে দেওয়া হলঃ

১। যুক্ত্রাস্ট্রের মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
২। বাংলাদেশের মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
৩। পাকিস্তানের মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৬ বছর
৪। চীনের মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ২০ বছর।
৫। কানাডা মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৯ বছর।
৬। ভারত মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
৭। ইতালি মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
৮। কেনিয়া মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
৯। রাশিয়া মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
১০। বেলজিয়াম মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
১১। যুক্তবাজ্য মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
১২। নরওয়ে মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
১৩। অস্ট্রেয়ি মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।
১৪। মেক্সিকো মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ বছর।