ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা

বানিজ্য মেলায় যাওয়ার গাইড

এই বারই প্রথম স্থায়ী কোন অবকাঠামোতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা (ডি আই টি এফ)। ২৬ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা নিয়ে মানুষের যেমন আগ্রহ আছে বেশি তেমনি দুশ্চিন্তা ও আছে। তার প্রধান কারণ হল মেলার স্থানে যাওয়া নিয়ে। এই বারের বানিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে যা আগে অনুষ্ঠিত মেলা থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। নতুন জায়গায় নতুন অবকাঠামো ৩২ একর জায়গার উপর দাঁড়ানো। এটি বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

৭৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই অবকাঠামোটির নাম দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ-চীন এক্সিবিশন সেন্টার। যাদের নিজস্ব কোন পরিবহন তাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে অনেক জামালে হতে পারে এমন আশক্ষায় অনেকে উৎকন্ঠাই ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার সকল ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বেশ কিছু পজেটিভ পদক্ষেপ নিয়েছেন। ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলাটি ১৯৯৫ সাল থেকে যৌথভাবে আয়োজন করে আসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।

বানিজ্য মেলায় বাংলাদেশ-চীন এক্সিবিশন সেন্টারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ

* নামঃ বাংলাদেশ-চীন এক্সিবিশন সেন্টার

* স্থানঃ পূর্বাচল

* ঘোষণাঃ ২০১৭ সালে

* অর্থায়নঃ চীন ও বাংলাদেশ

* ব্যয়ঃ ৭৭৩ কোটি

* প্রদর্শনী স্পেসঃ ৩৩ হাজার বর্গমিটার

* মোট বুথঃ ৮০০ টি

* বুথ স্পেসঃ ৮ দশমিক ৬৭ বর্গমিটার

* রয়েছে নামাজের স্থান ও শিশুদের খেলার জায়গা

* একটি মাল্টি-ফাংশনাল হল ৪৭৩ আসন বিশিষ্ট

* একটি কনফারেন্স রুম ৫০ আসন বিশিষ্ট

* সভাকক্ষঃ ৬ টি

* ক্যাফেটেরিয়া ৫০০ আসনের

* খোলা জায়গাঃ ৬ একর

* নির্মাণ করেঃ চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরের্শন

* মেলা খোলাঃ সাধারণ দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা

* সিসিটিভি কন্ট্রোল রুম

* বিশেষ আকর্ষণঃ বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন

* সর্বমোট ১৫০০ গাড়ি পাকিং এর ব্যবস্থা

* প্রবেশ ফিঃ ৪০ টাকা (বড়)

* প্রবেশ ফিঃ ২০ টাকা (ছোট)

* টয়লেটঃ ১৩৯ টি

* মেলা খোলাঃ ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা

* টয়লেট ব্যবহারঃ ফ্রি

ব্যাক্তিগত গাড়ি দিয়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলায় যেভাবে যাবেন

যাদের নিজস্ব গাড়ি আছে তাদের উচিত নিজেদের গাড়ি নিয়ে মেলায় যাওয়া কারণ সেখানে পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা আছে। তাছাড়া পাবলিক গাড়িতে অনেক ভিড় ও নিরাপত্তা কম থাকে। আপনি যদি ঢাকা থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলায় যেতে চান তাহলে আপনি এইসব এলাকা আব্দুল্লাহপুর, বিমানবন্দর, উত্তরা, মিরপুর, আশুলিয়া, টঙ্গী, বনানী,মহাখালী, গুলশান, শাহাবাগ, বারিধারা, গাবতুলী, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, শ্যামলী, কল্যাণপুর, ধানমন্ডি, খিলক্ষেত, নদ্দা, আফতাবনগর, রামপুরা, হাতিরঝিল, বনশ্রী, মালিবাগ থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার ব্যবহার করে তিনশ ফিট দিয়ে মেলায় যেতে পারবেন সহজেই। আর আপনি যদি ঢাকা-সিলেট এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে দিয়ে মেলা যেতে চান তাহলে আপনাকে নরসিংদী ও কাচপুর থেকে গাউছিয়া হয়ে কাঞ্চন ব্রিজ দিয়ে আসতে হবে।

পাবলিক পরিবহনে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলায় যেভাবে যাবেন

বাংলাদেশ সরকার মেলায় আগত দর্শনাথীদের কথা চিন্তা করে বিষেশ বাসের ব্যবস্থা করেছে। ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ড থেকে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার পর্যন্ত ৩০ টি বিআরটিসি বাস চলাচল করবে। কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ড ছাড়া ঢাকাতে আর কোন পাবলিক বাস পাবেন না মেলাই যেতে। তাই আপনি ঢাকার যেখানেই থাকেন না কেন আপনাকে সবার আগে আসতে হবে কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ডে। কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলার দূরত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার যা যেতে প্রায় ২০ থেকে ৪০ মিনিট লাগবে। আর যদি যানজট থাকে রাস্তায় তাহলে দেড় থেকে দুই ঘন্টা লাগতে পারে মেলায় যেতে।

আপনি যদি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে আসতে চান মেলায় তাহলে আপনাকে নামতে হবে গাউছিয়া বাসস্টেন্ডে। সেখান থেকে বানিজ্য মেলাগামী অনেক বাস ও লেগুনা পাবেন। আর যদি আপনি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে মেলাই আসতে চান তাহলে আপনাকে কাচপুর হয়ে গাউছিয়া আসতে হবে। সেখান থেকে বাসে অথবা লেগুনায় কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত আসতে পারবেন। কাঞ্চন ব্রিজ থেকে মেলায় ১০ টাকা অটো ভাড়া দিয়ে বানিজ্য মেলার মূল গেইটে যেতে পারবেন।

ট্রেনে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলায় যেভাবে যাবেন

আপনারা যারা ট্রেনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বানিজ্য মেলায় আসবেন তাদেরকে এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশনে নামতে হবে। স্টেশন থেকে নেমে সিনজি অথবা যেকোনো লোকাল বাসে করে যেতে হবে কুড়িল বিশ্বরোডে। সেখান থেকে বিআরটিসি বাসে করে মেলাই যেতে পারবেন। আপনি চাইলে এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে সরাসরি টেক্সি অথবা সিএনজি ভাড়া করে মেলায় যেতে পাররেন। এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশন ছাড়া ও কমলাপুর, টঙ্গি, তেজগাও রেলওয়ে স্টেশন নেমেও মেলাই যেতে পারবেন। আপনি যেখানেই নামেন না কেন আপনাকে সবার আগে আসতে হবে কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ড।

Tags: No tags

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *