You are currently viewing গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর জীবনী ও লাইফস্টাইল
গিয়াস উদ্দিন তাহেরী

গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর জীবনী ও লাইফস্টাইল

গিয়াস উদ্দিন তাহেরী এর যেসকল ট্রেন্ডিং কথা র‌্যাংকিং এর কাতারে পরে সেগুলো হচ্ছে- খাবেন? ঢেলে দেই? ‘ভাই পরিবেশটা সুন্দর না? কোনো হইচই আছে? এই শব্দগুচ্ছ এখন অহরহ ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ইন্টারনেটের নাগরিকরা ছবি পোস্ট করলেই এসব ক্যাপশন দিচ্ছেন এবং আপনারা ফেইসবুক প্ল্যাটফরম একটু ঘাঁটলেই এমনটা দেখতে পাবেন। উপরে যে চারটির বাক্য এর কথা বলা হয়েছে তা পুরোপুরি বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরী।

গিয়াস উদ্দিন তাহেরী উপস্থিতিদের সঙ্গে কতটুকু রসিকতা করেন তা দেখা যায় তার বক্তব্যের শুরুতেই। সম্প্রতি আপনি হয়তো জেনে থাকবেন তার একটি ওয়াজের অংশ বিশেষভাবে ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।— ১. কেউ কথা কইয়েন না! ২. একটু চা খাব! ৩. খাই একটু! ৪. আপনারা খাবেন! ৫. ঢেলে দেই! ৬. ভাই পরিবেশটা সুন্দর না! ৭. কোনো হইচই আছে! ৮. আমি কি কাউকে গালি দিয়েছি! ৯. কারোর বিরুদ্ধে বলতেছি! ১০. এরপরেও একদল লোক বলবে তাহেরী ভালো না!

মুফতী মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন তাহেরী “দাওয়াতে ঈমানী” বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর তিনি আলোচনায় আসেন তার বিখ্যাত জিগির “বসেন বসেন, বইসা যান” এর জন্য । এই শব্দের ব্যবহারেই রাতারাতি গিয়াসউদ্দীন আত তাহেরী সমালোচিত ও সমালোচিত হতে লাগলেন। এবং হইরই করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে সৃষ্টি হয় নানা ধরনের ট্রল, বুলিং এছাড়ও ফানি ভিডিও, মেম । এবং এই গুলো ঘটার পর কিছুদিন ওয়াজ বন্ধ রাখতে হয়েছিলো তাহেরী সাহেবকে। আবার পরবর্তী আলোচনায় এলেন এই বক্তা তাহেরী সাহেব।

মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর জন্ম ও জন্মস্থান?

জন্ম নাম: গিয়াস উদ্দিন
জন্মঃ ২ মে ১৯৮৯ ব্রাহ্মণবাড়িয়া
বয়সঃ ৩০ বৎসর
স্থানীয় নামঃ গিয়াস উদ্দিন তাহেরী
শিক্ষাঃ জামেয়া আহমদিয়া কামিল মাদ্রাসা
পেশাঃ ইসলাম প্রচারক
স্ত্রীঃ মিসেস গিয়াস
পরিচিতিঃ জনসাধারনের বক্তব্য
কার্যকালঃ ২০১২ বর্তমান
উচ্চতাঃ ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি
ওজনঃ ৬৫ কেজি
উপাধিঃ মুফতি

মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন তাহেরী জন্মগ্রহণ করেন (২ মে ১৯৮৯) এবং তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চাপাইর গ্রাম। এছাড়া তাহেরী সাহেব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাস করেন। এরপর তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ফাজিল ও কামিল পাস করেন। তাহেরী সাহেবের বাবার নাম মাওলানা নজিবউদ্দিন এবং তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার একজন আরবি শিক্ষক আর মা মোহছেনা বেগম এবং তিনি একজন গৃহীণি।

গিয়াসউদ্দিন তাহেরীর ব্যক্তিগত জীবন

ব্যক্তিগত জীবনে মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর দুই সন্তানের বাবা। একটি মেয়ে সন্তান ও একটি ছেলে সন্তান। ছেলের নাম তাওফিক রেজা ও মেয়ের নাম তাবাসসুম। মুফতি মুহম্মদ গিয়াসউদ্দিন আত তাহেরীর তার সন্তানদের তিনি হাফেজ বানাতে চান।

আমি একজন মানুষ

মুফতি মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন তাহেরীর বলেছেন আমি সব সময় ওয়াজ করে থাকি ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর গুরুত্ব দিয়ে। এবং তিনি এটাও বলেন, মানুষ মাত্রই ভুল তাই বিভিন্ন সময়ে আবেগের বসে অনেক কথাই বলে ফেলি এবং কিছু ভিন্নধর্মী মানুষ এ সব বক্তব্যকে নিয়ে বিকৃতি করে ভাইরাল করে। আমি ওয়াজে এমন কিছু করি বা বলি না; যা কোরআন ও হাদিসের জন্য সাংঘর্ষিক এছাড়াও আমি ১৭ বছর ধরে ওয়াজ করি। এ ধরনের সমস্যা কখনও হয়নি। আমি বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শ্রোতা ও বক্তার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করি। আমি কোরআন ও হাদিসের সাংঘার্ষিক কোনো কিছু করি ও বলি না।v

মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী এত সমালোচিত কেনো?

মুফতি গিয়াসউদ্দিন আত তাহেরি সাহেবের সমালোচিত হওয়ার কারণগুলো হচ্ছে- বিভিন্ন সময়ে জিকির করার নামে হাস্যরসাত্মক কিছু কান্ড করেছেন। ইন্টারনেটে সেগুলো ভাইরাল হচ্ছে। তার এই ভাইরাল ভিডিও’র আলোকে ইউটিবাররা ডিজে গান তৈরি করছেন। দেশ-বিদেশের কন্টেন্ট নির্মাতারা এসব ডিজেগুলোকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করছেন। এছাড়াওকিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের অলিখিত থিম সং ছিল “খেলা হবে”। এবং এই গানটায়ও তাহেরীর ডিজে’র প্রভাব রয়েছে৷

ভাইরাল জিকিরের পর গিয়াস উদ্দিন তাহেরী সাহেবের একটি নাচ ভাইরাল হয়। এটি বাংলাদেশ এর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের একটি ভিডিও ছিল। ওই ভিডিওতে দেখা যায় তাহেরি সাহেব ও তার সঙ্গীসাথীরা লালন সঙ্গীত পরিবেশন করছেন, সাথে নৃত্যের তাল দিচ্ছেন, এখানেও তিনি সমালোচিত হন। এভাবে ভাইরাল হওয়ার পর তাহেরি সাহেব ওয়াজ মাহফিলে তার বক্তৃতার মধ্যে মাঝে মাঝে কিছু কথা বলেন যেগুলো ইউটিউবাররা ভাইরাল করে। যেমন- “ঢেলে দিব, ঢেলে দেই”। এসব কারণেই তিনি সমালোচিত হতে থাকেন।

এভাবে ক্রমাগত বিতর্কের মধ্যেই তাহেরি সাহেব মামলার শিকার হন এবং ঢাকার জনৈক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে ইসলামকে বিকৃত করে উপস্থাপনের অভিযোগ এনে মামলা করেন৷ এবার তাহেরি সাহেব ভাইরাল কথাবার্তা না বলার কারনে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে মামলা থেকে মুক্তি পান এবং এই মামলার পর তাহেরি সাহেবের ওয়াজ মাহফিলে প্রদানকৃত বক্তব্য অনেক পরিশীলিত হয়।

মুফতি গিয়াসউদ্দিন আত তাহেরিকে নিয়ে আমার অভিমতঃ

ইসলামিক স্ক্লার মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী যথেষ্ট মেধাবী ও তার কন্ঠস্বর অতি সুন্দর! তিনি সুন্দর বক্তৃতাও দিতে জানেন এবং ওয়াজ-মাহফিলের ময়দানে কি করে দর্শকদের মুগ্ধ করা যায় তার ক্ষমতা তার মধ্যো লিপিবদ্ধ রয়েছে! তাহেরী যদি এইসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে ইসলাম প্রচারের দিকে মনোনিবেশ হতেন তাহলে অনেক দূর অগ্রসর হতে পারবেন! আশা রাখছি তাহেরী সাহেব ইসলাম প্রচার ও প্রসারে নিজেকে সর্বদা নিবেদিত করবেন এবং করে যাবেন!

গিয়াস উদ্দিন তাহেরির সোসাল প্রোফাইলঃ

ফেসবুক