You are currently viewing ইসলামিক স্কলার মুফতি আমির হামজার জীবনী
মুফতি আমির হামজা

ইসলামিক স্কলার মুফতি আমির হামজার জীবনী

মুফতি আমির হামজা একজন ইসলামিক আলোচক হিসাবে তাঁর খ্যাতি বিশ্বজুড়ে পরিচিত। তিনি বাংলাদেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, ভারত সহ অন্যান্য মুসলিম ও অমুসলিম রাষ্ট্রগুলিতে ইসলামকে আমন্ত্রণ করেছিলেন। আল্লাহর রহমতে অনেক অমুসলিম ভাই-বোন ও তাদের পরিবার ইসলাম গ্রহণ করেছেন। মুফতি আমির হামজা বর্তমান বাংলাদেশের অন্যতম ইসলামিক আলোচক এছাড়াও আমির হামজা শৈশব থেকেই খুব মেধাবী এবং অনেকেই তাকে ভালোবেসে “বাংলাদেশের জাকির নায়েক” বলে ডাকে। কারণ মুফতি হামজা তাঁর বক্তব্যে হাদীস ও কুরআনের উল্লেখ করেছেন। একজন ইসলামিক আলোচক হিসাবে আমির হামজা বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পরিচিত।

মুফতি আমির হামজা যদিও কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন তবে আমির হামজার কথাগুলি সুস্পষ্ট তিনি বক্তৃতা চলাকালীন শ্রোতাদের হাসিখুশি করে তোলে এবং অত্যন্ত সাহসী এবং জনপ্রিয় কথাবার্তা। আমির হামজা দেশের অন্যতম ইসলামী ব্যক্তিত্ব হওয়া সত্ত্বেও তার ভিতরে কোনও অহংকার নেই। সে আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করে না, তিনি বাংলাদেশের অনেক ইসলাম বিরোধী ব্যক্তিকে প্রত্যক্ষ সমালোচনা ও কঠোর সতর্কতা দিয়েছেন। তিনি কোরআনকে সুন্দর উপায়ে আলোচনা করে শ্রোতাদের কাছে ব্যাখ্যা করেছেন। এবং সবচেয়ে বড়ো যে বিষয়টি তা হচ্ছে’ “মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর” তার মুফতি হামজার সাথে খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে।

মুফতি আমির হামজা তাঁর আসল নাম আমির হামজা। সারাবিশ্বে তিনি জনগণের মনেপ্রাণে হাফেজ মাওলানা আমির হামজা নামে পরিচিত; শুধু তাই নয় এই তরুণ বক্তা ধর্মীয় নানা বিষয় নিয়ে ওয়াজ করে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি ইফতাহ পড়েছেন অর্থাৎ তিনি একজন মুফতি।

মুফতি আমির হামজার জন্ম ও জন্মস্থান?

দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন (২৮-অক্টোবর ১৯৯২) মুফতি আমির হামজা। তাঁর পিতার নাম মোঃ রিয়াজ উদ্দিন।

জন্ম নামঃ আমির হামজা
জন্মঃ ২৮-অক্টোবর ১৯৯২
বয়সঃ ২৭ বৎসর
জন্ম স্থানঃ কুষ্টিয়া, খুলনা, বাংলাদেশ
উপ-নামঃ মাওলানা মোঃ আমির হামজা
পেশাঃ ইসলামী প্রচারক
স্ত্রীঃ মিসেস আমির হামজা
শিক্ষাঃ কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
কার্যকালঃ ২০১০-বর্তমান
ওয়েবসাইটঃ amirhamzawaz.com

মুফতি আমির হামজার শারীরিক পরিসংখ্যান

উচ্চতাঃ ৫ফুট ২ ইঞ্চি
ওজনঃ ৫৮ কেজি
চোখের রঙঃ কালো
চুলের রঙঃ কালো
গায়ের রঙঃ হাল্কা কালো বাদামি
রক্তের গ্রুপঃ জানা নেই

মুফতি হামজার পছন্দের তালিকা কি?

শখঃ কোরআন তেলায়াত
প্রিয় জায়গাঃ মক্কা ও মদিনা
প্রিয় বাক্তিঃ হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)

মুফতি আমির হামজার শিক্ষা জীবন?

 ইসলামিক আলোচক মুফতি আমির হামজা প্রাথমিক শিক্ষা তাঁর জেলা থেকে পেয়েছেন। তিনি অল্প বয়সেই কোরআনের হাফেয হন। এরপরে তিনি “ইফতাহ” শেষ করেন এবং তার জেলার নামী কাওমী মাদ্রাসা হতে “মুফতি” হন। এবং মুফতি সাহেব পাশাপাশি আলিয়া মাদরাসা হতে দাখিল ও আলিমে অত্যান্ত ভালো ফলাফল অর্জন করেন। মুফতি হামজা আলিয়া থেকে হাদিস ও ফিকাহ এর উপর কামিল করেছেন , পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সেরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সুযোগ পান। অতঃপর তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া থেকে “বিশ্ববিদ্যালয়ের কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজের উপর অনার্স ও মাসটার্স করেন। পড়াশোনা শেষে দাউই ইসলামে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে পিএইচডি গবেষণায় আছে । খতীবঃ আদ্ব-দীন হাসপাতাল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ঢাকা ।

আমির হামজার বিবাহ ও পারিবারিক জীবন?

ইসলামিক স্ক্লার মুফতি আমির হামজা তিনি পুরোপুরি একজন হাফেজ ও মুফতি এবং মুফাসসির শুধু তাই নয় তিনি অত্যন্ত নম্রতা ভদ্রতা মিশ্রিত ও মৃদু হাসির মানুষ একজন। মুফতি হামজার পারিবারিক জীবনে তিনি তার দুই মেয়েকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন।

মুফতি আমির হামজার মাসিক আয় কতো?

তার মাসিক আয়ের সঠিক তথ্য নেই। আমির হামজা কুরআন থেকে যা কিছু পেয়ে থাকেন তা দিয়েই তিনি জীবন যাপিত করেন। আমির হামজার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল তাহজিব কেন্দ্রের বোন উদ্বেগ! সেখানে উপস্থাপন করা হয়েছে সর্বশেষ মাওলানা আমির হামজার জনপ্রিয় নতুন বাংলা ওয়াজ মাহফিল এছাড়াও স্টুডিও বক্তৃতা ও কোরান তিলাওয়াত এবং ইসলামিক বই ইত্যাদি।

মুফতি আমির হামজার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য বিবৃতি

আল্লাহর ক্ষমাপ্রাপ্ত বান্দাহ করা। সাহাবীদের ঈমান। পরকালের সম্বল। নারীর উপর পুরুষের মর্যাদা ও নেককের নারীর বৈশিষ্ট। হাশরের ময়দানে ৭৩ কাতারে কে থাকবে কোন কাতারে! এছাড়া রয়েছে ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর হুকুম পালন করা ইত্যাদি।

মুফতি হামজা কি কারণে গ্রেফতার হন?

আমির হামজার স্ত্রী তামান্না সুলতানা জানান, বিকেল ৫টার সময় হবে, আমার শ্বশুর বাড়িতে ৬/৭ জন সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা ব্যক্তি প্রবেশ করেন এবং কোনো কিছু বলার আগেই আমার স্বামী (মুফতি আমির হামজা) তাকে হাতে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে ব্লাক একটি হাইচ গাড়িতে তোলেন এবং এর পরে ওই পোশাকধারীরা গাড়িতে উঠে তাদের কালো পোশাক গায়ে দিয়ে গাড়ি টান দেন। এছাড়াও তাদের কাছে রাইফেলসহ অস্ত্রও ছিলো! এবং মোহাম্মদ (আমির হামজার দাদা) এটাও বলেন, মাওলানা আমির হামজাকে সাদা পোশাকে পরিধান করে আসা কিছু লোকে প্রশাসনের পরিচয় দিয়ে তাকে নিজ বাড়ি থেকে নিয়ে গেছে এবং আমির হামজা সকলের সঙ্গে আজকেই দেখা করতে এসেছিল বাড়িতে।

এছাড়াও আরও জানান আমির হামজার পরিবারের সদস্য, কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের বাড়ি থেকে বিকেলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে ৬/৭ জন মুফতি তখন আমির হামজাকে তুলে নিয়ে যায়। প্রথমদিকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্মকর্তারা। সোমবার ২৪ মে দুপুরে কুষ্টিয়ায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে তদন্তাধীনে একটি মামলা রয়েছে মাওলানা আমির হামজার বিরুদ্ধে।

সেই মামলাতে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মুফতি হামজাকে আজ কুষ্টিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন মুফতি আমির হামজার বিরুদ্ধে। সিটিটিসি কার্যালয়ে আনা হচ্ছে মাওলানা আমির হামজাকে। ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর বিষয়ে মুফতি আমির হামজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আরও জানা গেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তথ্য মতে গত ৫ মে সংসদ ভবন এলাকা থেকে তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলা চালানোর চেষ্টায় তখন একজনকে গ্রেফতার করা হয় সাকিব নামে। শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয় সাকিবকে গ্রেফতারের পর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে।

ওই মামলায় আসামি করা হয় সাকিবসহ আলী হাসান ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবীকে! কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তথ্যমতে জানা যায়, ওয়াজ-মাহফিলে ইসলামের নামে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন মুফতি হামজা এছাড়াও ইউটিউবে প্রকাশিত তার বেশকিছু বক্তব্য উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে এবং কোমলমতি কিশোর-তরুণরা জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট হচ্ছে যা শুনে। সম্প্রতি আমির হামজা আত্মগোপনে ছিলেন হেফাজতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযানের কারণে।

এছাড়া সাকিবের কাছ থেকে পাওয়া জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আমির হামজা, হারুন ইজহার, আলী হাসান উসামা, মাহমুদুল হাসান গুনবী প্রমুখ ব্যক্তির উগ্রবাদের বার্তা সংবলিত ভিডিও পাওয়া যায় সাকিবের মোবাইলে। যা দেখার ফলে সে উগ্রবাদে আসক্ত হয়ে পরে এবং সাকিবকে গত ১৫ মে আটক করা হয়।

তখন ওই যুবক জানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে এসকল এক ইসলামী বক্তার নির্দেশে এই পরিকল্পনা করেছিল এবং সে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয় বলে জানায় কয়েকজনের ওয়াজ ও বক্তব্য শুনে। ঠিক তখনই আমির হামজাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (DMP) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি টিম। কারন তিনি ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর আলোচিত ইসলামী বক্তা।

উল্লেখ্য, অল্প বয়সেই কোরআনের হাফেজ হন মুফতি আমির হামজা। এরপর তিনি মুফতি হন কওমি মাদরাসা থেকে। এছাড়াও মুফতি আমির হামজা পাশাপাশি আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিমে দুর্দান্ত ভালো ফলাফল অর্জন করেন এবং তিনি আল-কুরআন এর ওপর অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া থেকে।