You are currently viewing আ স ম আবদুর রবের জীবনী ও রাজনীতি
আ স ম আবদূর রব

আ স ম আবদুর রবের জীবনী ও রাজনীতি

আ স ম আব্দুর রবের পুরো নাম আবু সায়েদ মোহাম্মদ আব্দুর রব। বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের প্রতিষ্ঠাতা এই নেতা জন্ম নেন ব্রিটিশ শাসনামলে , ১৯৪৫ সালে। জন্ম নেন নোয়াখালি জেলার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে।

এক নজরে আ স ম আবদুর রব

মূলনামঃ আ স ম আবদুর রব

জন্মঃ ১৯৪৫ সালে

জন্মস্থানঃ নোয়াখালী

ধর্মঃ ইসলাম

চুলের কালারঃ কাল

চোখের কালারঃ কাল

শরীরের কালারঃ উজ্জল শ্যামলা

পেশাঃ রাজনীতিবিদ

ভাষাঃ বাংলা

জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী

প্রতিষ্ঠাতাঃ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (রব) জে এস ডি

 সাবেক ভিপিঃ ডাকসু

বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক উপাধি প্রধান করেনঃ ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ

প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেনঃ ২ মার্চ

উপাধিঃ বীর মুক্তিযুদ্ধা

সংসদ্য সদস্য নির্বাচিত হনঃ ১৯৯৬ সালে

আ স ম আবদুর রবের পাকিস্তান আমল ও মুক্তিযুদ্ধকালীন রাজনীতি

১৯৭১ সালের ১ মার্চ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নির্দেশে গঠন করা হয় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। শেখ মুজিবের নির্দেশে ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকি , শাজাহান সিরাজ, ডাকসুর সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আ স ম আবদূর রব ও আব্দুল কুদ্দুস নিয়ে গঠিত হয়  স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ । স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৯৭১ সালের গণ অভ্যুত্থান ও অসহযোগ আন্দোলনকে অনুপ্রেরণা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেয়। এই ছাত্র আন্দোলনকে কখনো কখনো ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আবার কখনো স্বাধীণ বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নামেও ডাকা হয়।

১৯৭১ সালের ২ মার্চ ছাত্রলীগের নেতা আব্দুল কুদ্দুস, শাহজাহান সিরাজ, নূরে আলম সিদ্দিকী, আর তাঁর নেতৃত্বে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এসময় হাজার হাজার ছাত্র জনতাকে অনুপ্রাণিত করেন তিনি। এই জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে তিনি জাতিকে নতুন দেশ গঠনে জনগনকে প্রস্তুত হতে প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনা দেওয়ার কাজ করেন। এই জাতীয় পতাকায় মানচিত্র খচিত ছিল। সে সময় তিনি ছিলেন ডাকসুর ভিপি। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগ মূহূর্তে ২৩শে মার্চ ১৯৭১, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান নিজ বাসভবনে এ পতাকা উত্তোলন করেন। ইকবাল হলের ১১৬ নাম্বার রুমে রঙ করা হয় পতাকাটি।

১৯৭১ সালের ৩ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা উপাধি দেন আ স ম আবদুর রব। তখন বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত আস্থাভাজনদের বলা হত বঙ্গবন্ধুর চার খলিফা নামে। এই চার খলিফার একজন ছিলেন আ স ম আবদুর রব।

আরো পড়ুনঃ তোফায়েল আহমেদের জীবনী

আ স ম আবদুর রবের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী রাজনীতি

১৯৬২ সালে ছাত্রলীগের যে অংশ স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস গঠন করেছিল তারা মুক্তিযুদ্ধের পরে  গঠন করে জাসদ। ১৯৭২ সালের ৩১শে অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের ৭ সদস্যবিশিষত আহ্ববায়ক কমিটির ঘোষনা দেওয়া হয়। এ কমিটিতে তিনি যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। কিছুদিন পর বামপন্থী দল জাসদ শেখ মুজিবুর সরকারের প্রতিদ্বন্ধী হয়ে দাঁড়ায়। জাসদের সদস্যদের ছিল বিপ্লবী স্বপ্ন। এই সদস্যদের হাত ধরে জাসদ খুব দ্রুত হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ। জাসদ বর্তমানে নিবন্ধিত ১৩ নং দল।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর নভেম্বর মাসে চলে অভ্যূত্থান আর পাল্টা অভ্যূত্থান। জাসদের সমর্থনে এক অভ্যূত্থান হয় ৭ নভেম্বর। এই অভ্যূত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহনের পর ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসে সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি নিয়ে আসে জাসদের ১৭ নেতাকে। তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীতে অভ্যূত্থান এবং সরকার উৎখাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এই মামলায় কর্নেল তাহেরকে ফাসি দেওয়া হয়। এই ১৭ জন অভিযুক্তের মধ্যে একজন ছিলেন আ স ম আব্দুর রব।

তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল। সাজা চলাকালীন ১৯৭৯ সালের এপ্রিলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হলে সাজা মওকুফ না করে ১৯৭৯ সালের ১ মে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম জার্মানি। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায়ও তিনি রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যান। সরকার চিকিৎসা খরচ বন্ধ করে দিয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যায়। তারপরও তিনি জাসদের সদস্যদের সহযোগীতার চিকিৎসা চালিয়ে যান। পরে সাজা মওকুফ হলে তিনি ১৯৮০ সালে দেশে ফিরে আসেন।

১৯৮৮ সালে প্রায় সকল দল জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। এ সময় তিনি সন্মিলিত বিরোধীদলের নেতৃত্ব দেন।  ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতন হলে রাজনৈতিক ও জনরোষের কবল থেকে বাচার জন্য তিনি আত্মগোপোনে যেতে বাধ্য হন। ১৯৮৮ সালের ১৩ই মার্চ থেকে ১৯৯১ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন। তাঁর আগে ও পরে বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে লক্ষীপুর ৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি জাসদের নেতা ছিলেন। জাসদ এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগকে সমর্থন দেওয়ায় ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তিনি নৌপথ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করেন। তারপর ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করেন।

আরো পড়ুনঃ জিল্লুর রহমানের জীবনী

দর্শক আ স ম আবদুর রবের সম্পর্কে আপনার মতামত কী?

বাংলাদেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ আ স ম আবদুর রব সম্পর্কে আপনার মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আপনি যদি আ স ম আবদুর রব সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে থাকেন, তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।