যমুনা ফিউচার পার্ক বন্ধের দিন, টিকিট মূল্য ও ভ্রমণ গাইডলাইন

আপনি কী জানেন বাংলাদেশের সর্ববৃহত শপিং কমপ্লেক্স কোনটি? অনেকে হয়ত জানেন না বাংলাদেশের সর্ববৃহত শপিং কমপ্লেক্স কোনটি আবার অনেকে হয়ত জানেন। কিন্তু না জানার সংখ্যাটাই বেশি আমার মনে হয়। যারা জানেন না তাদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে যমুনা ফিউচার পার্ক বাংলাদেশের সর্ববৃহত শপিং কমপ্লেক্স। শুধু বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শপিং মল নয় এটি আকারের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শপিং কমপ্লেক্স এটি। আমাদের আশেপাশের কোন দেশে এত বড় মার্কেট নেই। দৃষ্টিনন্দন যমুনা ফিউচার পার্ক এর আয়তন ৪,১০০,০০ বর্গফুট প্রায় যাতে ৫০০+ দোকান রয়েছে। পার্কের প্রবেশ মুখেই আপনার নজর কাড়বে বেশ কিছু দারুণ ন

যমুনা ফিউচার পার্ক এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ

* নামঃ যমুনা ফিউচার পার্ক
* স্থপতিঃ এ জে এম আলমগীর
* ঠিকানাঃ ক-২৪৪, প্রগতি সরনি, কুড়িল, বারিধারা, ঢাকা, বাংলাদেশ
* আয়তনঃ ৪,১০০,০০ বর্গফুট
* দোকানঃ ৫০০+
* ধরণঃ শপিং মল
* ভবণঃ ৮ তলা বিশিষ্ট
* নির্মাণ শুরুঃ ২০০২ সালে
* নির্মাণ শেষঃ ২০১৩ সালে
* খুলে দেয়া হয়ঃ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে
* মালিকঃ যমুনা গ্রুপ
* যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠাতাঃ নুরুল ইসলাম বাবুল
* ওয়েবসাইটঃ https://www.jamunafuturepark.com/

যমুনা ফিউচার পার্ক কোথায় অবস্থিত?

যমুনা ফিউচার পার্ক ঢাকার সবচেয়ে ব্যস্ত এলাকা গুলোর মধ্যে একটি এলাকায় অবস্থিত। যার সঠিক ঠিকানা ক-২৪৪, প্রগতি সরনি, কুড়িল, বারিধারা, ঢাকা, বাংলাদেশ। বারিধারার মত একটি অভিজাত এলাকায় এই সুবিশাল শপিং কমপ্লেক্সটি অবস্থিত। স্থপতি এ জে এম আলমগীর একশায় ঢাকার বারিধারাতে তৈরি ৮ তলা বিশিষ্ট যমুনা ফিউচার পার্ক প্রথমবার দেখলেই সবার নজর কাড়বে।

যমুনা ফিউচার পার্ক বন্ধের দিন ও খোলার দিন

বাংলাদেশ সরকার প্রতিটি এলাকার মার্কেট গুলোকে একটি নির্দিষ্ট দিন সারাদিন বন্ধ ও একটি নির্দিষ্ট দিন আধা বেলা বন্ধ করার নির্দেশ রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় যমুনা ফিউচার পার্ক এর সারাদিন বন্ধের দিন রবিবার এবং আধা বেলা বন্ধের দিন সোমবার।

[ যমুনা ফিউচার পার্ক রোববার পূর্ণ ও সোমবার অর্ধ দিবস বন্ধ ]

আপনাকে যমুনা মার্কেট থেকে কেনাকাটা করতে হলে অবশ্যই এই দুই দিনের কথা মাথায় রাখতে হবে। কেননে বন্ধের দিনে মার্কেটে এসে আপনার সারাদিনই মাটি হতে পারে। তাছাড়া আপনি এই বন্ধের দিন গুলা ছাড়া অন্য যেকোন দিন আপনার পছন্দের কেনাকাটা করতে পারবেন কোন রকম ঝামেলা ছাড়া।

যমুনা ফিউচার পার্ক প্রতিদিন ওপেন ও খোলার টাইম

আমরা অনেকেই আছি যারা শপিং করার জন্য খুব সকালে অথবা খুব রাতে যেতে পছন্দ করি। কিন্তু এই সময় দেখা যায় অনেক শপিং মল বন্ধ থাকে। দেখা গেল আপনি যে টাইমে শপিং এ গেলেন সেই টাইমে মার্কেট বন্ধ তখন আপনার মণ মেজাজ দুইটাই খারাপ হবে। তাই আপনাকে মার্কেট কখন বন্ধ সময় ও কখন খোলার সময় জেনে যেতে হবে। ঢাকার সবচেয়ে বড় শপিং মার্কেট যমুনা ফিউচার পার্কে ও একটি নির্দিষ্ট সময় খোলা হয় এবং বন্ধ করা হয়। যমুনা ফিউচার পার্ক বন্ধের দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০ টায় সবাই কেনাকাটা ও ঘুরার জন্য খুলা হয় এবং রাত ৮ টায় বন্ধ করে দেয়া হয়। এই নির্দিষ্ট টাইমের ভেতরে আপনাকে মার্কেটের সকল কাজ শেষ করতে হবে।

যমুনা ফিউচার পার্ক কিভাবে যাব?

যমুনা ফিউচার পার্কে যেতে আপনাকে কোন ঝামেলা পড়তে হবে না কারণ এলাকাটি ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। আপনি যদি ঢাকার বাসিন্দা হন তাহলে আপনি খুব সহজেই মার্কেটে যেতে পারবেন। নিজস্ব গাড়িতে আসতে চাইলে ঢাকার যেকোন জায়গা থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার দিয়ে খুব আরামে মার্কেটে যেতে পারবেন। বাসে আসতে চাইলে কুড়িল বিশ্বরোড নেমে রিকশা, অটো, বাস, সিনজি, টেক্সি দিয়ে মার্কেটে যেতে পারবেন। তাছাড়া সরাসরি বারিধারা, বাড্ডা, গুলশান হয়ে যাতায়াত করা গাড়ি দিয়ে সরাসরি মার্কেটের সামনে নামতে পারবেন।

ট্রেনে কিভাবে যমুনা শপিং মলে যাবেন

ট্রেনে যমুনা শপিং মলে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভাল হবে এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে। শপিং মলটি এয়ারপোর্ট থেকে খুবই কাছে হওয়ায় সেখান থেকে খুব তারাতারি বাসে করে কুড়িল হয়ে মার্কেটে যেতে পারবেন। তাছাড়া ঢাকার অন্য যেকোন রেলওয়ে স্টেশন থেকে ও যমুনা শপিং মলে যেতে পারবেন। কমলাপুর, টঙ্গি, তেজগাও, ক্যান্টারম্যান্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাসে করে মার্কেটে আসার সুযোগ রয়েছে।

ব্লকবাস্টার সিনেপ্লেক্স

যমুনা শপিং মলের কতৃপক্ষ মার্কেটা আসা ক্রেতাদের বিনোদনের জন্য সিনেমা দেখার ব্যবস্থা রেখেছে। কেনাকাটা শেষে একটু আরামে রিলাক্স করতে বসে যেতে পারেন আপনার পছন্দের সিনেমা দেখার জন্য। যমুনা ব্লকবাস্টার নামের সিনেপ্লেক্সে দেশী বিদেশী সিনেমা প্রদর্শন করা হয়। এই সিনেমা হলটি কয়েকটি স্কিনের মাধ্যমে এক সাথে একধিক সিনেমা প্রদর্শিত হয়। সিনেমা প্রেমিরা শুধু সিনেমা দেখার জন্য শপিং মলে যেয়ে থাকেন। এই সিনেমা হলে সকল ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

যমুনা ফিউচার পার্ক টিকিটের মূল্য

পার্কে বিনোদনের জন্য সবার জন্য বিশেষ করে শিশুদের জন্য বেশ কিছু পেইড রাইড রয়েছে। আপনি যদি সবগুলো রাইডের স্বাদ নিতে চান তাহলে আপনাকে গুণতে হবে সর্বমোট ৭৫০ টাকা। তাছাড়া আপনি চাইলে আলাদা আলাদা ভাবে রাইডে চড়তে পারবেন। আলাদা রাইডের দাম গুলো হলঃ
১। স্কাই ড্রপঃ ১৫০ টাকা
২। পাইরেট শিপঃ ১৫০ টাকা
৩। রোলার কোস্টারঃ ৩০০ টাকা
৪। টাওয়ার চ্যালেঞ্জঃ ১৫০ টাকা
৫। উয়িন্ডমিলঃ ১৫০ টাকা
৬। ফ্লাইং ডিস্কোঃ ১৫০ টাকা

যমুনা ফিউচার পার্ক এর মালিক কে?

বাংলাদেশের ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকার জন্য তৈরি যমুনা ফিউচার পার্কে সবধরণের আধুনিক সুযোগ সুবিধা রেখেছে মালিক পক্ষ। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এই বৃহৎ শপিং মলটির মালিক সম্পর্কে জানতে আপনাদের অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শপিং কমপ্লেক্স হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের যমুনা ফিউচার পার্কের মালিক যমুনা গ্রুপ। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী গুলোর মধ্যে যমুনা গ্রুপ অন্যতম যেটি প্রতিষ্ঠা করেন নুরুল ইসলাম বাবুল ১৯৭০ সালে। নুরুল ইসলাম বাবুল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। যমুনা গ্রুপের এই মার্কেটের পাশাপাশি রয়েছে বেভারেজ, মিডিয়া, প্রিন্ট, রাসায়নিক, বিজ্ঞাপন, বস্ত্র, ইলেকট্রনিক্স, চামড়া, টয়লেট্রিজ, হোন্ডা ইত্যাদি অনেক রকমের ব্যবসা।

যমুনা ফিউচার পার্ক প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে

যমুনা ফিউচার পার্ক এর বিশাল প্রজেক্ট এর যাত্রা শুরু হয় ২০০২ সালে। যমুনা গ্রুপের তত্বাবধানে ২০০২ সালে কাজ শুরু করার মাধ্যমে উদোগ্যতারা স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে গেছে অনেক দিন যাবত। যমুনা ফিউচার পার্ক সর্ব-সাধারণের জন্য খুলে দেয়ার জন্য উপযুক্ত হয় ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালের পর থেকে সাধারণ মানুষ এই শপিং মল থেকে কেনাকাটা ও ঘুরাঘুরি করতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top